10/10/2022
আপনি কি জানেন সিদরাতুল মুনতাহা কী?........
আসুন জেনে নেই!
সিদরাতুল মুনতাহাঃ
আরবী ‘সিদরাহ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কুল বা বরই গাছ, আর ‘মুনতাহা’ শব্দের অর্থ হচ্ছে শেষ সীমানা। সুতরাং, ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ অর্থ হচ্ছেঃ একেবারে শেষ সীমানায় অবস্থিত বরই গাছ।
এই গাছটি সাত আসমানের উপরে, একেবারে শেষ সীমানায় অবস্থিত, যা অত্যন্ত সুন্দর ও সুসজ্জিত। এই গাছটিকে 'সিদরাতুল মুনতাহা' বলা হয় কারণ এটা হচ্ছে আল্লাহ তা'আলার আরশ ও তাঁর সমগ্র সৃষ্টির মাঝে একটা সীমানা বা বাউন্ডারী।
সিদরাতুল মুনতাহার উর্ধে কোন ফেরেশতা গমন করতে পারে না, এমনকি আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত কোন ফেরেশতাও না। সিদরাতুল মুনতাহার উর্ধ্বে আল্লাহর আরশে মু'আল্লাকা অবস্থিত।
মিরাজের রাত্রিতে নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিব্রাঈল আ’লাইহিস সালাম 'সিদরাতুল মুনতাহা' পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে একা রেখে চলে যান, কারণ সিদরাতুল মুনতাহার সীমানা অতিক্রম করে আরশের দিকে অগ্রসর হলে আল্লাহ তাআলা’র নূরে জিব্রাঈল আ’লাইহিস সালাম-এর ডানাগুলো পুড়ে যেত।
আর তাঁর যাওয়ার অনুমতিও ছিলো না।
আল্লাহ তা'আলা যত ওয়াহী (আদেশ বা বিধানাবলী) নাযিল করেন, তা আরশ থেকে প্রথমে সিদরাতুল মুনতাহায় নাযিল করা হয়। অতঃপর সেখান থেকে ওয়াহী বহনকারী সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাদের মাধ্যমে তা দুনিয়াতে প্রেরিত হয়।
অনুরূপভাবে, বান্দাদের আমলনামা সমূহ প্রথমে 'সিদরাতুল মুনতাহায়' নিয়ে আসা হয়। অতঃপর, এখান থেকে আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। ফেরেশতা বা নবী-রাসুল কেউই সিদরাতুল মুনতাহার স্থান অতিক্রম করতে পারেননি, একমাত্র আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া।
মিরাজের রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে এসে সিদরাতুল মুনতাহা সম্পর্কে বলেছিলেন,
'আমি সিদরাতুল মুনতাহা দেখলাম। এর ফল (বরই) যেন ‘হাজার’ নামক স্থানের (বড়) মটকার ন্যায়। আর তার পাতা যেন হাতীর কানের মতো বড়।
সিদরাতুল মুনতাহার মূল থেকে চারটি ঝরনা প্রবাহিত হয়েছে। দুইটি ঝরণা ভেতরে, আর দুইটি ঝরণা বাইরে। এই (চারটি ঝরণা) সম্পর্কে আমি জিবরাঈলকে জিজ্ঞাসা করলাম।
তিনি বললেন, ভেতরের দুইটি ঝরণা জান্নাতে অবস্থিত। আর বাইরের ঝরণা দুইটির একটি হল (ইরাকের) ফুরাত, আর অপরটি হল (মিশরের) নীল নদ।
সুবহানাল্লাহি ওবিহামদিহি।