18/09/2025
♻️ স্ক্যাবিস ♻️
স্ক্যাবিস হল একটি ছোঁয়াচে চর্মরোগ যা সারকোপ্টেস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইটের কারণে হয়। এই মাইটগুলি ত্বকের উপরের স্তরে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং মল ত্যাগ করে, যার ফলে তীব্র চুলকানি ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
🔰কেন হয়?
এটি সারকোপ্টেস স্ক্যাবি মাইটের ত্বকে সংক্রমণের কারণে হয়।
🔰কীভাবে ছড়ায়?
স্ক্যাবিস মূলত সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়ায়, বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে দীর্ঘক্ষণ ধরে শারীরিক সংস্পর্শে (যেমন ১৫-২০ মিনিট) থাকলে। এটি কাপড়, বিছানা বা তোয়ালে ভাগাভাগি করার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে, তবে তা কম সাধারণ। জনাকীর্ণ পরিবেশ এবং দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি স্ক্যাবিস ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ায়।
🔰কীভাবে বুঝা যাবে স্ক্যাবিস?
লক্ষণগুলি সাধারণত মাইট সংক্রমণের ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পরে দেখা যায়:
* তীব্র চুলকানি: রাতে চুলকানি অনেক বেড়ে যায়।
* ফুসকুড়ি: ছোট ছোট লালচে দানা বা ফোসকা দেখা যায়। এই ফুসকুড়ি সাধারণত আঙুলের ফাঁকে, কব্জি, কনুই, বগল, যৌনাঙ্গ, স্তন এবং নিতম্বের ভাঁজে বেশি হয়।
* মাইটের গর্ত (Burrows): ত্বকের উপর সরু, আঁকাবাঁকা, ধূসর বা লালচে রেখা দেখা যেতে পারে, যা মাইটের গর্ত।
🔰চিকিৎসা কী?
স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা হয়:
* পারমেথ্রিন ক্রিম (Permethrin cream 5%): এটি সবচেয়ে সাধারণ চিকিৎসা। ক্রিমটি ঘাড় থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পুরো শরীরে লাগাতে হয় এবং ৮-১৪ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলতে হয়। সাধারণত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার এটি ব্যবহার করতে হয়।
* ওরাল ইভারমেকটিন (Oral Ivermectin): যদি টপিকাল ক্রিম ব্যবহার করা সম্ভব না হয় বা রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়, তাহলে এই ওষুধটি মুখে খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়।
* চুলকানি কমানোর ওষুধ: অ্যান্টিহিস্টামিন (Antihistamines) চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর এবং তোয়ালে গরম জলে ধুয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় শুকাতে হবে। যেসব জিনিস ধোয়া যায় না, সেগুলো একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে অন্তত ৭২ ঘণ্টা মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে যাতে মাইটগুলো মারা যায়।
* পরিবারের সকলের চিকিৎসা: পরিবারের সকল সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিকিৎসা করানো জরুরি, এমনকি যদি তাদের লক্ষণ নাও থাকে।
🔰কীভাবে প্রতিরোধ করতে পারি?
* সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: স্ক্যাবিস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
* ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ভাগাভাগি করবেন না: কাপড়,
তোয়ালে, বিছানার চাদর বা ব্যক্তিগত সামগ্রী অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করা থেকে বিরত থাকুন।
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন: নিয়মিত গোসল করুন এবং পরিচ্ছন্ন পোশাক পরুন।
* সচেতনতা: স্ক্যাবিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ান এবং লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ স্ক্যাবিসের লক্ষণ অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
শিশু সার্জারী ও শিশু ইউরোলোজি বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com
#স্ক্যাবিস