07/11/2025
শীতকালে সাধারণত মানুষের হজম শক্তি অনেক ভালো থাকে তবে এই সময় দোষ বেদে বায়ু এবং কফ দোষের সঞ্চয় ঘটে এবং বায়ু ও কফ দোষজনিত রোগ গুলো বৃদ্ধি পায়।
শীতকালে সাধারণত বাত ব্যথা, পুরনো আঘাত জনিত ব্যথা, ধুলাবালি ও ঠান্ডা জনিত এলার্জি, ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি বেশি দেখা দেয় তবে নিচের নিয়ম গুলো ফলো করলে আমরা এইসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবো। তবে বাইরে বের হলে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার উত্তম।
***শীতকালে ত্রিদোষের মধ্যে বায়ু এবং কফ দোষজনিত রোগ গুলো বেড়ে যায়।*****
বায়ু(বাত) দোষ বৃদ্ধির কারণ:
*অতিরিক্ত ভাজাপোড়া।
*অতিরিক্ত রুক্ষ ও শুকনা খাবার ।
*অতিরিক্ত ঝাল খাবার ।
*কাঁচা শাকসবজি খাবার ।
*প্যাকেট জাত দ্রব্য ।
*নিয়মিত মাংস বা ভারী খাবার ।
*অতিরিক্ত রাত্রি জাগরণ ।
*স্নিগ্ধ বা স্নেহ জাতীয় খাবার কম খাওয়া ।
*অতিরিক্ত রতিক্রিয়া বা মাস্টারবেশন বা সহবাস।
*মল, মূত্রের বেগ ধারন।
*অতিরিক্ত পরিশ্রম ।
*অতিরিক্ত ধূমপান মদ্যপান।
*****বাত নাশক কাজ/কর্ম বা উপায়****
*শরীরে নিয়মিত উষ্ণ তেল মালিশ করা ।
*শাকসবজি ঘি দিয়ে রান্না করা।
*নিয়মিত ঘি, ডিম ,দুধ ( কাঁচা হলুদ/রসুন
মিশিয়ে দুধ সেবন উত্তম)।
*উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করা ।
*ব্যথার জায়গায় মালিশ করা ।
*শরীরে অতিরিক্ত বাতাস না লাগা।
*কালো এবং নীল কাপড় এড়িয়ে চলা ।
*****কফ দোষ বৃদ্ধির কারণ:*****
*অতিরিক্ত পানি ধারণ করতে পারে এরকম খাবার খেলে (যেমন লবণ, শসা ,তরমুজ, দই)
*অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার ।
*দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার ।
*মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার ।
*শারীরিক পরিশ্রম না করলে ।
*অতিরিক্ত ঘুমালে ।
*অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও জাংফুড খাবার খেলে।
****কফ দোষ দূর করার উপায়:****
✓নিয়মিত সরিষার তেল, তিলের তেল, তিসির তেল, অলি ওয়েল ব্যবহার।
✓উষ্ণ খাবার, এক বছরে পুরনো মধু, কালোজিরা খাওয়া উত্তম।
✓কফা রোগীদের তিতা,ঝাল, রস উত্তম।
🥗 বাত ও কফ নাশক খাবার
✅ উপকারী খাবারসমূহ
1. গরম ও হালকা খাবার – যেমন স্যুপ, মুগডাল, খিচুড়ি, হালকা ভাত।
2. মসলা জাতীয় দ্রব্য – আদা, গোলমরিচ, পিপুল, জিরা, ধনে, দারচিনি, তেজপাতা।
3. তেলে রান্না করা খাবার – বিশেষ করে তিলের তেল বা সরিষার তেলে রান্না।
4. সবজি – লাউ, ঝিঙা, করলা, শিম, পুঁই, পালং, মুলা, উচ্ছে, ঢেঁড়স (হালকা সিদ্ধ)।
5. ফল – আপেল, ডালিম, নাশপাতি, আমলকি, লেবু, পেঁপে (পরিমাণমতো)।
6. দুধজাত খাবার – গরম দুধ (সামান্য আদা বা হলুদ মিশিয়ে), ঘি (অল্প পরিমাণে)।
7. উষ্ণ জল ও ভেষজ চা – যেমন তুলসী, আদা বা দারচিনি চা।
---
❌ বর্জনীয় খাবার
1. ঠান্ডা, ভারী ও তৈলাক্ত খাবার (যেমন মিষ্টি, দই, আইসক্রিম)।
2. অতিরিক্ত ময়দাযুক্ত বা ভাজা খাবার।
3. অতিরিক্ত ডালজাতীয় (মসুর, ছোলা) ও ফাস্টফুড।
4. ঠান্ডা পানি বা ফ্রিজের খাবার।
---
🌿 বাত ও কফ নাশক ভেষজসমূহ
🔹 একসঙ্গে দোষ দুইটি দমন করে এমন ভেষজ
1. ত্রিকটু চূর্ণ – (শুঠ + মরিচ + পিপুল) → কফ ও বাত উভয় নাশক।
2. দশমূল – (দশটি মূলের সংমিশ্রণ) → বাতজনিত ব্যথা ও প্রদাহ কমায়।
3. রাসনা – বাতনাশক ও জয়েন্টের ব্যথায় উপকারী।
4. গুগ্গুলু – যেমন যোগরাজ গুগ্গুলু, ত্রিফলা গুগ্গুলু, মহাযোগরাজ গুগ্গুলু।
5. ত্রিফলা – হজম বাড়ায়, দোষসম্য রাখে।
6. হলুদ (Haridra) – প্রদাহনাশক ও কফ দমনকারী।
7. আদা (Shunthi) – হজমে সহায়তা করে, কফ নাশক।
8. তুলসী ও লবঙ্গ – কফজনিত সমস্যা দূর করে, বায়ু সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।
9. অশ্বগন্ধা – বাতদোষ থেকে সৃষ্ট দুর্বলতা ও ব্যথা কমায়।
10. ত্রিফলা + ত্রিকটু + গুগ্গুলু – মিলিতভাবে বাত-কফ সমন্বয়ে উৎকৃষ্ট দাওয়াই।