31/10/2022
ডায়াবেটিস-কোলেস্টেরলের যম!.......
অতি পরিচিত এই গাছের উপরই ভরসা করেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা...
আজও প্রকৃতিতে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা যে কোনও অসুখের প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পারে।
প্রকৃতি তার ভাঁড়ারে সাজিয়ে রেখেছে সব রকমের নিরাময়— এ কথা খানিকটা সত্যি তো বটেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞান যে আধুনিক হয়েছে, উন্নত হয়েছে তার শিক্ষাও অনেকখানিই দিয়েছে প্রকৃতি।
আজও প্রকৃতিতে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা যে কোনও অসুখের প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পারে। আমাদের চারপাশে এমন হাজার হাজার গাছ-গাছালি রয়েছে যাদের ফল, পাতা, কাণ্ড, শিকড় ও ফুল অবধি ঔষধি গুণে ভরপুর। এ রকমই একটি গাছ, বাংলার খুবই পরিচিত। তা হল সজনে। সজনে ডাঁটা এবং সজনে পাতা বাঙালির খুবই পছন্দের একটি খাদ্য। আর এরই মধ্যে রয়েছে হরেক গুণ।
💓 সজনের উপকারিতা—
সজনে ডাঁটা আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি। কিন্তু সজনে পাতার উপকারিতাও কম নয়। সজনে পাতা চুল পড়া রোধ করে, রক্তশূন্যতা, বাত, থাইরয়েড, হাঁপানি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ডায়াবেটিস-সহ বহু রোগের ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয়, সজনে পাতা ওজন কমানোর জন্যও উপকারী। আয়ুর্বেদ অনুসারে এই গাছটি অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা মনে করেন, সজনে পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১ (থায়ামিন), বি ২ (রাইবোফ্লাভিন), বি৩ (নিয়াসিন), বি-৬, ফোলেট, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন সি), ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।
💓 সজনের বৈশিষ্ট্য---
এটিকে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিক্যানসার, অ্যান্টিডায়াবেটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। শুধু তাই নয়, এতে রয়েছে অ্যান্টিএজিং উপাদানও।
💓 উপকারিতা
সজনের একাধিক উপকারিতা রয়েছে—
১. হিমোগ্লোবিন উন্নত করতে সাহায্য করে।
২. রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. লিভার এবং কিডনির দূষিত পদার্থ দূর করে।
৪. রক্ত বিশুদ্ধ করে, চর্মরোগ দূর করে।
৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে।
💓 পাতা খাওয়ার উপকারিতা--
শুধু ডাঁটা নয়। সজনে পাতাতেও রয়েছে হাজার গুণ। সজনে পাতা খেলে—
১. বিপাক উন্নত হয়।
২. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমায়।
৪. থাইরয়েডের ক্রিয়া উন্নত করে।
৫. প্রসূতির বুকের দুধের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক।
💓 কী ভাবে খাওয়া যায়—
সজনে খাওয়ার বিষয়ে বাঙালিকে নতুন করে আর কী বা শেখানোর আছে! তবে চেনা পদের বাইরে সজনের তাজা পাতার রস খাওয়াও সমান উপকারী। অথবা শুকনো পাতা গুঁড়ো করে খাওয়া যায়।
সজনে পাতার গুঁড়ো রুটিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়। স্মুদি বা এনার্জি ড্রিঙ্ক বানিয়ে খাওয়া যায়। মুসুর ডালেও মিশিয়ে নেওয়া যায়। সজনে ডাঁটার ভিতরের শুঁটি সিদ্ধ করে স্যুপের মতো পান করলে বাতের ব্যথা কম হতে পারে। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদেরও উপকার হতে পারে।
💓 পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া --
সজনে একটু গরম প্রকৃতির। সাধারণত শীতের শেষেই সজনে খাওয়া হয় এ দেশে। তবু, অ্যাসিডিটি, পাইলস, ভারী ঋতুস্রাব, ব্রণ ইত্যাদির সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাঁরা সতর্কতা বজায় রাখতে পারেন। পিত্ত দোষ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভাল।