07/12/2020
ডাক্তারের চেম্বারে/ হাসপাতালে আসার আগে রুগীদের জন্য কিছু করনীয়...
১। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাটা আগে বলবেন, কি বলবেন একটু গুছিয়ে আসবেন। লিখেও নিয়ে আসতে পারেন। বাচ্চা/বয়স্ক/ মানসিক রুগীর ক্ষেত্রে যিনি রুগীর রোগ সমন্ধে ভালো জানেন তিনি সাথে থাকবেন।
২। কি কি ঔষধ খান, সেগুলা নিয়ে আসবেন বা সঠিকভাবে বলবেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও প্রেসারের ঔষধ ও অনেক দিন ধরে যেসব ঔষধ খান সেগুলা বলতেই হবে। আগের প্রেসক্রিপশন, পরীক্ষা নিরিক্ষার কাগজ নিয়ে আসবেন।
৩। সবসময় ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পড়ে আসবেন। টাইট কোন পোশাক পড়ে আসবেন না। আপনার কোথায় সমস্যা সে অনুযায়ী প্লান করে পোশাক পড়বেন। যেমন হাটুর সমস্যা থাকলে এমন কাপড় পড়বেন না, যেটা হাটুর উপর উঠেনা।
৪। মেয়েরা বোরকা পড়ার ক্ষেত্রে, এমনটা পড়বেন, যেটাতে প্রেসার মাপা যায়। এমন বোরকা পড়ে আসেন অনেকে, হাতের দুইদিকে বেশি কাপড় থাকে, প্রেসার সঠিকভাবে মাপা যায় না। বেশি ক্লিপযুক্ত হিজাব না পড়ে, বড় ওড়না/ অন্য কিছু দিয়ে ভালো করে মুখ মাথা পেচিয়ে আসতে পারেন। অনেক সময় গলা দেখার প্রয়োজন হয়।
৫। ডাক্তার এর রুমে ঢুকার আগে মুখটা ভালো করে পরিষ্কার করে আসবেন। বিশেষ করে পান খেয়ে আসবেন না। কারণ অনেক সময় মুখের ভিতর ও জিহবা দেখতে হয়।
৬। ডাক্তার এর রুমে ঢুকার আগে ফোনটা বন্ধ বা সাইলেন্ট করে আসবেন। কোন ফোন না ধরাই ভালো। খুব জরুরী হলে বাইরে গিয়ে কথা বলবেন।
৭। চেম্বার / হাসপাতালে সময় নিয়ে আসবেন। কারণ আপনি যেভাবে ভাবছেন, সেভাবে তত তাড়াতাড়ি নাও হতে পারে। জরুরী রুগী ছাড়া সিরিয়াল অনুযায়ী আসবেন। জরুরী থাকলেও বলে ঢুকবেন। হুট করে ঢুকে যাবেন না।
৮। হাসপাতালে আসলে অবশ্যই একটা টিকিট কেটে আসবেন। এটা সরকারী নিয়ম। এতে লজ্জার কিছু নাই বরং রোগী/রোগীর লোক হিসেবে এটা আপনারও দায়িত্ব। আপনার টিকিট কাটা মানে রাষ্ট্র যে জনগনকে সার্ভিস দেয়, ডাক্তাররা যে হাসপাতালে রুগী দেখে/ কাজ করে তার প্রমান। আর আলাদা কোন কাগজে থাকেনা। তাছাড়া হাসপাতালে অন্য কাগজে রুগী দেখা রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্যায়। আর সরকারী ঔষধ / টেস্ট এর সুযোগের জন্য আপনার টিকিট লাগবে।
৯। কারো সাথে কোন তর্কে জড়াবেন না। কোন সমস্যা হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলুন। আপনার ধৈর্য্য ও ভালো আচরণ অনেক সমস্যা কমাতে পারে।
১০। কোন ডাক্তার চায়না রুগী মারা যাক, সব ডাক্তার চায় রুগী ভালো হোক। অনেক সীমাদ্ধতার মধ্যেই ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীদের হাসপাতালে কাজ করতে হয়। অনেক প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ লোকবলের অভাব। যত চেষ্টাই করা হোক, মানুষ মারা যাবেই। তাই কেউ মারা গেলে উত্তেজিত হয়ে অযথা মারামারি বা ভাংচুর করবেন না।
পরিশেষে অবশ্যই সবাই নাক মুখ ঢেকে মাস্ক পড়ুন ও সুস্থ্য থাকুন।
( আমার বন্ধু বুলবুলের লেখা, পড়ে মনে হল এই কথাগুলো আমি আমার রোগীর, রোগীর স্বজনদের, সর্বোপরি সবাইকে বহুবার বলতে চেয়েছি কিন্তু গুছিয়ে লেখার সময় পাইনি।
ধন্যবাদ বন্ধু)
Courtesy : Dr-Ashraf Hosen Bulbul