21/08/2022
***ডায়বেটিস ও তার হোমিও চিকিৎসা ***
-----------------------------------------------------
আসুন আমরা প্রথমে জানব ডায়াবেটিস কি ? ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি ? এবং ডায়াবেটিসের ধরন ।
মানুষের শরীরে কোন কারণে ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাব হলে ক্ষারের কার্যকারিতা হ্রাস পেলে অথবা এ দুটোরই ফলশ্রুতিতে দেহে শর্করা, আমিষ ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের বিপাক ক্রিয়ার অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায় । এরকম অবস্থাকেই ডায়াবেটিস মেলাইটাস বা বহুমূত্র অথবা সংক্ষেপে ডায়াবেটিস বলে
ডায়াবেটিস মেলিটাস এমন একটা রোগ যাতে রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে যায় । আপনার আমার পেটের মাঝের অংশে রয়েছে অনেকটা গাজরের মতো দেখতে একটি গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি । তার নাম প্যাংক্রিয়াস বাংলায় অগ্ন্যাশয় । এই অগ্ন্যাশয়ের আবার দুটি অংশ – অন্তঃস্রাবী ( Endocrine ) ও বহিঃস্রাবী ( Exocrine ) ।
অগ্ন্যাশয়ের বহিঃস্রাবী অংশ থেকে বার হয় কয়েক ধরনের উৎসেচক বা এনজাইম । এই সব উৎসেচক প্রোটিন, শ্বেতসার-শর্করা ও স্নেহজাতীয় খাবারকে হজম করায় ক্ষুদ্রান্ত্রের ভেতর । এই উৎসেচকগুলো অগ্ন্যাশয় থেকে প্যাংক্রিয়াসের নালী বা প্যাংক্রিয়াটিক ডাকটের মাধ্যমে পাকস্থলীর পরবর্তী অংশ ডিওডেনামে ( গ্রহণী ) এ গিয়ে খাবারের সঙ্গে মিশে কাজ করতে থাকে । অগ্ন্যাশয়ের এই নালীযুক্ত বহিঃস্রাবী অংশ নানা ধরনের খাদ্যের হজমের পক্ষে অপরিহার্য হলেও, ডায়াবেটিস রোগ সৃষ্টিতে এর কোনও ভুমিকা নেই ।
অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃস্রাবী বা অনাল ( Ductless ) অংশ ডায়াবেটিস রোগের সঙ্গে সরাসরি জড়িত । এই অংশ থেকে দুটি হরমোন সরাসরি রক্তে গিয়ে মেশে । হরমোন দুটি হল ইনসুলিন আর গ্লুকাগন । অগ্ন্যাশয়ের দ্বীপপুঞ্জের মতো দেখতে আইলেট কোষ ( বিটা সেল ) থেকে আসে ইনসুলিন । আর অন্য কোষগুলো ( আলফা সেল ) থেকে গ্লুকাগন । এই দুই হরমোন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে । ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় গ্লুকাগন বাড়ায় ।
ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগে অগ্ন্যাশয়ের আইলেট কোষপুঞ্জ থেকে ইনসুলিনের নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বা স্বাভাবিকের চাইতে কমে আসে । শরীরে প্রোটিন, শ্বেতসার-শর্করা ও স্নেহজাতীয় খাদ্যের বিপাকের কাজে সঠিকমাত্রায় ইনসুলিন অপরিহার্য । ইনসুলিন নিঃসরণ কমে গেলে বা একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে শরীরের স্বাভাবিক বিপাকীয় কাজকর্মে বিপর্যয় দেখা দেয় । এই বিপর্যয় একটানা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে চক্ষু , বৃক্ক ( Kidney ), স্নায়ু ( Nerves ) ও হৃদযন্ত্রে তৈরি হয় নানা জটিলতা ।
শরীরে বিপাকীয় কাজক্রমে ভাঙা ( Catabolism ) আর গড়া ( Anabolism )-র স্বাভাবিক একটা ভারসাম্য রয়েছে । ইনসুলিনের অভাবে ভাঙা আর গড়ার এই স্বাভাবিক ছন্দে বিঘ্ন ঘটে শরীরী ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় ।
খাবার খাওয়ার পর অন্ত্র থেকে গ্লুকোজ রক্তে গিয়ে গ্লুকোজের মাত্রাকে বাড়ীয়ে দেয় হঠাৎ করে । অগ্ন্যাশয় থেকে সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ে । ইনসুলিন শরীরে প্রান্তিক কোষগুলোতে গ্লুকোজের প্রবেশ ও কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে কাজে লাগানোর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সাহায্য করে । প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে অসময়ের জন্য লিভারে জমা করার কাজটিও ইনসুলিনের । এক কথায়, শরীরের কোষে কোষে গ্লুকোজকে ঠিকঠিক কাজে লাগানো ও অতিরিক্ত গ্লুকোজকে অসময়ের জন্য লিভারে জমা করে রাখার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে ইনসুলিন ।
ফ্যাট বা প্রোটিনের ক্ষেত্রেও ইনসুলিনের ভুমিকা একইরকম গঠনমূলক । শরীরে “ ফ্যাটসেল ” গুলোর
মধ্যে ফ্যাটি অ্যাসিডকে কাজে লাগানো ও অতিরিক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডকে ট্রাইগ্লিসারাইড হিসাবে জমা করে রাখতে সাহায্য করে ইনসুলিন । প্রোটিন জাতীয় খাবার থেকে তৈরি হওয়া অ্যামাইনো অ্যাসিডকে কোষে প্রবেশ করিয়ে ইনসুলিন তা থেকে প্রোটিন তৈরি করার কাজে সাহায্য করে ।
শরীরে ইনসুলিনের অভাব দেখা দিলে বিপাকের এই স্বাভাবিক ছন্দটিতে বিঘ্ন ঘটবেই । ইনসুলিনের অভাবে কোষে গ্লুকোজের প্রবেশ ও ব্যবহার ( Utilisation ) কমে । কমে গ্লাইকোজেন তৈরি, এর পাশাপাশি লিভারের জমা থাকা গ্লাইকোজেন ভেঙে তৈরি হয় গ্লুকোজ । গ্লুকোজ তৈরি হয় কার্বোহাইড্রেট নয় এমন উৎস থেকেও ।
একদিকে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোতে গ্লুকোজের প্রবেশ ও ব্যবহার কমে, অন্যদিকে গ্লাইকোজেন ও অন্য সূত্র থেকে ভেঙে গ্লুকোজ এসে জমা হতে থাকে রক্তে । ইনসুলিনের অভাবে তাই রক্তে থিকথিক করতে থাকে গ্লুকোজ । অথচ শরীরে কোষগুলো যথেষ্ট পরিমাণ গ্লুকোজ না পেয়ে ভুগতে শুরু করে অপুষ্টিতে । ডায়াবেটিস তাই “ প্রাচুর্যের মধ্যেও দুর্ভিক্ষ ” । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাসায় “ স্টারভেশান অ্যামিস্ট প্লেনটি ”
ডায়াবেটিসে এর পাশাপাশি ইনসুলিনের অভাবে শরীরের কোষে কোষে প্রোটিন ভাঙতে থাকে । ফ্যাট বা চর্বির ক্ষেত্রে ট্রাইগ্লিসারাইড ভেঙে যেতে থাকে ফ্যাটি অ্যাসিডে । ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের বিপাকে ইনসুলিন গঠনমূলক ভুমিকা নেয় । ডায়াবেটিসে ইনসুলিনের অভাবে সেই গঠনের প্রক্রিয়া বাঁধা পায়, বাড়ে ভাঙন । অনিবার্যভাবে স্বাভাবিক শরীরী ভারসাম্যটি যায় নষ্ট হয়ে ।
ডায়াবেটিসের ধরন !
ডায়াবেটিস মেলিটাস প্রাথমিকভাবে দুরকম । টাইপ ওয়ান বা ইনসুলিন-নির্ভর ডায়াবেটিস ( IDDM ; Insulin Dependent Diabetes Mellitus ) আর টাইপ টু বা ইনসুলিন- নিরপেক্ষ ডায়াবেটিস ( NIDDM ; Non – Insulin dependent diabetes mellitius ) ।
টাইপ ওয়ান বা ইনসুলিন-নির্ভর ডায়াবেটিস ( IDDM ; Insulin Dependent Diabetes Mellitus ) – টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয়ের আইলেট কোষগুলো নষ্ট হয়ে গিয়ে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় । টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর পক্ষে বেঁচে থাকতে হলে নিয়মিত ইনসুলিনের ইঞ্জেকশান নেওয়া তাই আবশ্যিক ।
টাইপ টু বা ইনসুলিন- নিরপেক্ষ ডায়াবেটিস ( NIDDM ; Non – Insulin dependent diabetes mellitius ) - টাইপ টু ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন বার হওয়া কমে গেলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় না । টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের ক্ষেত্রে তাই বাইরে থেকে ইনসুলিন নেওয়া একান্ত আবশ্যিক নয় ।
আমরা প্রথমে জানলাম ডায়াবেটিস কি ? ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি ? এবং ডায়াবেটিসের ধরন । এবার আমরা জানব টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর পক্ষে যে কৃত্রিম ইনসুলিন ছাড়া বেঁচে থাকা সম্ভব নয় সেই ইনসুলিন আবিস্কারের কথা –
১৯২২ সালে ৩ মে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাসে শুধু নয়, সভ্যতার ইতিহাসে এই দিনটির কথা চিরকাল লেখা থাকবে সোনার অক্ষরে । ওই দিনটিতে ক্যানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন গবেষকের একটি দল মানুষের শরীরে ব্যবহারের উপযোগী ইনসুলিন আবিস্কারের কথা প্রথম ঘোষণা করেন । ওয়াশিংটনে আমেরিকান চিকিৎসকদের সংগঠনের সভায় প্রথম পেশ করা ওই আনুষ্ঠানিক গবেষণাপত্রের শিরোনাম ছিল – “ ডায়াবেটিসের রোগীদের ওপর অগ্ন্যাশয়ের নির্যাসের প্রভাব ’ । গবেষণাপত্রটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এটি > ‘ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কারগুলোর অন্যতম ’ হিসেবে বিপুল সমাদর লাভ করে ।
ইনসুলিন আবিস্কারের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ১৯২০ সালে, টরেন্টো শহরে । বিজ্ঞানীদলের প্রধান ফ্রেডরিক ব্যানটিং ছিলেন যশস্বী এক শল্যচিকিৎসক । ডায়াবেটিস রোগ বা গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ব্যাপারে তেমন কোনও উৎসাহ বা জ্ঞান ছিল না ব্যানটিংয়ের । অগ্ন্যাশয়ের গঠন নিয়ে পড়াশোনা করতে করতে আকস্মিকভাবেই আবিস্কারপ্রিয় ও উদ্যমি ব্যানটিংয়ের মাথায় ডায়াবেটিসের রোগীদের বাঁচাতে ইনসুলিন আবিস্কারের ইচ্ছা চেপে বসে । ব্যানটিং সাহায্যের আশায় ছুটলেন টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরবিদ্যার অধ্যাপক জে, জে আর ম্যাকলিঅডের কাছে । ম্যাকলিঅড সঙ্গে সঙ্গে ব্যানটিংকে গবেষণাগার, পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কুকুর ও একজন সহায়ক ছাত্র দিয়ে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন । ম্যাকলিঅডের একজন ছাত্র চার্লস বেস্ট নির্বাচিত হন ব্যানটিংয়ের গবেষণার সহায়ক হিসেবে ।
১৯২১ সালের গ্রীষ্মে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে শুরু হল ব্যানটিং ও বেস্টের গবেষণার কাজ । প্রথমদিকে কিছুটা বিপথচালিত হয়ে আগস্টের শুরুতে কুকুরের অগ্ন্যাশয় শুকিয়ে, ঠাণ্ডায় জমিয়ে তার নির্যাস জীবন্ত কুকুরের ওপর প্রয়োগ করতে শুরু করেন ব্যানটিং ও বেস্ট । গবেষণা চলছিল অধ্যাপক ম্যাকলিঅডের তত্বাবধানে ।
ওই নির্যাস শরীরে যাওয়া কুকুরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে আসতে থাকে । বারবার এই পরীক্ষা সফল হলেও অগ্ন্যাশয়ের নির্যাস থেকে বিশুদ্ধ ইনসুলিন আবিস্কারের তখনও অনেকটাই বাকী । এ ব্যাপারে একজন অভিজ্ঞ রসায়নবিদের সাহায্য নেওয়া দরকার মনে হওয়ায় এই দলে জেমস, বি, কলিপ নামের একজন জৈব রসায়নবিদকে আমন্ত্রণ জানানো হয় । ডিসেম্বর মাসে গবেষণার কাজে যোগ দেন কলিপ ।
১৯২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে আমেরিকার শরীরতত্ববিদদের সংগঠনের সভায় ডায়াবেটিসের রোগীদের ওপর অগ্ন্যাশয়ের নির্যাসের প্রভাব নিয়ে প্রথম গবেষণাপত্রটি পেশ করেন ব্যানটিং ও বেস্ট । এই গবেষণার ব্যাপারে সভায় শারীরবিদরা মুখর হয়ে ওঠেন । শারীরবিদদের মুল অভিযোগ ছিল, ওই অশুদ্ধ নির্যাস মানুষের ওপর প্রয়োগ করা অসম্ভব । কেন না কুকুরের শরীরেই এটি নানাধরনের বিষক্রিয়া তৈরি করছে ।
অগ্ন্যাশয় থেকে নির্যাস বার করার উন্নততর পদ্ধতি ও ওই নির্যাসের শুদ্ধকরণে কলিপ ইতিমধ্যে এগিয়ে গেছেন অনেকটাই । ১৯২২ সালের প্রথম দিনটিতে অগ্ন্যাশয়ের এরকম আংশিক শুদ্ধ নির্যাস প্রথম প্রয়োগ করা হল ১২ বছর বয়সী মৃত্যু পথযাত্রী এক শিশুর শরীরে । টরেন্টোর জেনারেল হাসপাতালে লিওনাদ থম্পসন নামের ওই শিশুর ডায়াবেটিসের উপসর্গ কমাতে ব্যর্থ হয় ব্যানটিং ও বেস্টের এই ঔষধ । হতোদ্যম না হয়ে ২৩ জানুয়ারি আরও শুদ্ধ একটি ঔষধ ওই শিশুটির শরীরেই আবার প্রয়োগ করা হল । এবার কিন্তু ঔষধের কাজ হল ।
প্রিয় পাঠক বন্ধুগন উপরের আলোচ্য অংশটুকু সংগ্রহ করা হয়েছে, ডাঃ শ্যামল চক্রবর্তীর লেখা গ্রন্থ “ হাতের মুঠোয় ডায়াবেটিস ” হইতে এবার আমরা জানব “ Insulin এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ” ও “ Antidiabetic ট্যাবলেটের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ” “ ডাঃ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ > চেয়ারম্যান ডায়াবেটিক এন্ড কিডনি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক এন্ড কিডনি ফাউন্ডেশন ও কিডনিরোগের গবেষক ও অলটারনেটিভ মেডিসিন/ আবিস্কারক – এর লেখা গ্রন্থ চিকিৎসা তথ্য হইতে ।
Insulin এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঃ – Insulin গ্রহণে শরীরে দুর্বলতা, মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা, মাথা ধরা, মাথা ব্যাথা, মাথা ঝিমঝিম করা, অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ, অতিরিক্ত ক্ষুধার অনুভুতি, বুক ধড়পড় করা, অস্বস্থিকর অবস্থার সৃষ্টি, স্নায়বিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে । অনির্ধারিত স্থানিক বিক্রিয়া Injection দেয়া স্থানে দেখা দেয় । এলারজিক বিক্রিয়া যেমন Skin rashes, Urticaria, Pruritus এবং Angioneurotic মাঝে মধ্যে দেখা দিতে পারে । মাত্রারিক্ত কৃত্রিম ইনসুলিন গ্রহণে Hypoglycaemic coma অথবা Shock দেখা দেয় এতে রোগী জ্ঞান হারায়, সঠিক ব্যবস্থা না নিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে । ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে Insulin সঠিকভাবে ত্বকের নীচের থেকে শোষিত হয় না । এছাড়া কৃত্রিম Insulin বিষণ্ণতা দূরীকরণ ঔষধের ক্রিয়া প্রতিহত করে ( Ref ; Martindele Pharmacopoeia thedition ) ।
Antidiabetic ট্যাবলেটের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঃ- বমি-বমিভাব, বমি হওয়া, Epigastric pain, Eosinophilia , Jaiundice, Skin rash, Blood disorder Including Leucopenia, Thrombocytopenia, Aplastic anaemia, Granulacytosis, Haemolytic, Liver damage প্রভুতি ঘটনা সংঘটিত হয় । Metformin HCL সেবনকারীদের ক্ষেত্রে B 12 শোষণ হয় না Haemoglobin এর মাত্রা কমে যায়, Megalopastic anaemia দেখা দেয় এবং Lactic acidosis হয় ।
বিপরীত নির্দেশনা ( Clntra indication ): Diabetes mellitus এর সাথে জ্বর, গ্যাংগ্রিন, গর্ভাবস্থায়, কিডনি ও লিভারের কাজ সঠিকভাবে না করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার ট্যাবলেট সেবন করা যায় না । Cardiovascular collapse, congestive heart failure , acute MI ( Mayocardiac Infarction ) এর ক্ষেত্রে Metformin HCL সেবন নিষিদ্ধ ( Ref : Martindale Pharmacopeia, 28th edition ) ।
প্রিয় পাঠক বন্ধু এপর্যন্ত আমরা যাহা জানলাম তাহা হইল যে শুধুমাত্র ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে আমাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ কখন যে হারিয়ে যাবে তাহা কেহই জানে না । তবে মনে প্রশ্ন জাগে
আরোগ্যের মূল উৎস কোথায় ?
চাষী অতি উৎকৃষ্ট বীজ সংগ্রহ করিল, অতি উত্তমরূপে জমিটি চাষ করিল, যথাসময়ে বীজগুলি বপন করিল, কিন্তু দৈব বিরোধী হইলেন, যথোপযুক্ত বারিপাত হইল না – চাষীর সকল পরিশ্রম, সকল চেষ্টা, সকল আশা বৃথা হইল, তাহার পরিশ্রমের ফলস্বরূপ শস্য প্রাপ্তি ঘটিল না । তদ্ররুপ রোগীর চিকিৎসায় কোন ক্রটি নাই। উৎকৃষ্ট চিকিৎসকদিগের হাতে চিকিৎসা চলিতেছে, ঔষধও ভাল এবং বিশিষ্ট ঔষধ – বিক্রেতার নিকট হইতে ক্রয় করিয়া প্রয়োগ চলিতেছে, সেবা , যত্ন তদ্বিরাদির কোনও প্রকারেই অঙ্গহানি নাই, অথচ রোগীর পীড়ার কোনও উপশম নাই – চিকিৎসকগন কহিতেছেন, কি জানি কেন , রোগীর উপকারের সম্ভাবনা দেখা যাইতেছেনা, বোধ হয় জীবনীশক্তি নাই, অতএব কি আর করা যাইবে ? এখানেও প্রকৃতি সাহায্য না করিলে
ফলোদয় হয় না, হইলও না ।
ইহার উত্তর নিম্নে প্রদান করিতেছি । সাংসারিক কাজের যে নীতি, চিকিৎসা কাজের পশ্চাতেও সেই একই নীতি অবলম্বন করিলে তবেই চিকিৎসা কার্যটি সার্থক হইতে পারে, নতুবা কোনও আশা নাই । একই নীতির উপর জগতের প্রত্যেক ঘটনা, প্রত্যেক ব্যাপার সংঘটিত ও পরিচালিত হইতেছে । আমাদিগকে যে কোনও কাজে কৃতকার্যতা লাভ করিতে হইলে, সেই একমাত্র নীতির বশে কাজ করিতে হইবে ।
এস্থলে প্রশ্ন হইবে, তবে কি আরোগ্য বিষয়ে চিকিৎসকের কোনও কর্তব্য বা ক্ষমতা নাই ? আমার জীবনের ৩২ বছর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কাজে ব্যয় করিয়া কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছি, সেই চিকিৎসাকার্য সম্পর্কে নিজেদের পুরুস্কারের শক্তির প্রভাব কতটুকু, তাহা অন্তঃকরনের সহিত যথেষ্ট ভাবে হৃদয়ঙ্গম করিয়াছি, এবং অতিশয় দৃঢ়তা ও বিশ্বাসের সহিত তাহা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ভ্রাতাদিগের এবং আমাদের অধীনে যাহারা চিকিৎসা করাইবার প্রয়াসী তাহাদিগকে বুঝাইতে পারি তবে নিজেকে ধন্য মনে করিব ।
আপনি যদি প্রাকৃতিক নিয়ম লঙ্ঘন না করে থাকেন তবেত ব্যাধিদুঃখ আসিতেই পারে না, তাই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সম্পূর্ণ নির্ভর করে প্রাকৃতিক লক্ষণ সমষ্টির উপর, রোগ লক্ষণের উপর নয় । আপনি চিন্তা করিয়া দেখিবেন – রোগীকে আরোগ্য করিবার বাহ্য সাধন বা উপায় – আপনার দ্বারা শুনির্বাচিত ঔষধ প্রয়োগ । ঔষধ নির্বাচন করিবার পূর্বে আপনার রোগীতে লক্ষণ সমষ্টি থাকা চাই । এই লক্ষণ-সমষ্টিই রোগীর আভ্যন্তরীণ পীড়ার বাহ্য প্রতিরূপ । ফলত এই প্রতিরূপটি প্রাপ্ত না হইলে, আপনার ঔষধ নির্বাচন অসম্ভব এবং রোগীর বাঞ্ছিত আরোগ্যটিও সুদূরপরাহত । সুতরাং আপনার বুঝিতে বিলম্ব হইবে না যে, আপনার ক্ষমতাটি অতি সসীম, অতি ক্ষুদ্র ও সঙ্কীর্ণ, যেহেতু প্রতি পদে আপনাকে রোগীর লক্ষণ সমষ্টির উপরেই ঔষধ নির্বাচন করিতে হয় এবং এই লক্ষণ সমষ্টি দ্বারা সঠিক রোগীলিপি প্রস্তুতের উপরেই আপনার কৃতকার্যতা বা অকৃতকার্যতা নির্ভর করিতেছে ।
চিকিৎসা ঃ-
নিম্নলিখিত ঔষধগুলির মধ্য হইতে রোগীর লক্ষণানুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করিতে হইবে ।
ইনসুলিন ( Insulin ) = ক্রনিক অন্ত্রের ( হজম শক্তির ) গোলমালে বিশেষত যদি উদরাময় ও লিভার বেড়ে যাওয়া ( হেপাটোমেগালি = Hepatomegaly ) লক্ষণ থাকে । উদরাময় যত বেশী ইনসুলিনের প্রয়োজনও বেশী হয় । সংক্রামক, রোগে ভুগে ক্ষত, ফোঁড়া, ব্রণ, শয্যাক্ষত বেশী হতে থাকে ঐ সাথে লিভার বড় হয় ।
Dr . K . P . Mozumder বলেন – ইনসুলিন ৩০ বা ২০০ শক্তি দিনে তিনবার সেবনে রক্তে ব্লাড সুগার লেভেল দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারে । আরও কিছু লক্ষণ এলেনস কী নোটস –এ দেখবেন ।
এই ঔষধে Blood Sugar – এর পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে ও প্রস্রাবের শর্করা বার হওয়া রোধ করে – Boericke ।
* এসেটিক অ্যাসিড ( Acetic Acid ) ,
* অ্যাসিড কার্বলিক ( Acid Carbolicum ) ,
* আর্জেন্ট মেটালিকাম ( Argent Met ) ,
* আর্সেনিক ( Arsenic Album ) ,
* বোভিষ্টা ( Bovista ) ,
* ক্যানাবিস ইন্ডিকা ( Cannabis Indica ) ,
* কষ্টিকাম ( Causticum ) ,
* কলোসিন্থ ( Colocynth ) ,
* অ্যাসিড ফস্ফরিকাম ( Acid Phos ) ,
* এমন - এসেটিকাম ( Ammon Aceticum ) ,
* ইউরেনিয়ম নাইট্রিকাম ( Uranium Nitricum ) ,
* সিজিজিয়াম ( Syzygium Jambolinum ) ,
* আর্সেনিক - ব্রোমাইড ( Arsenic Bromide ) ,
* অ্যাসিড ল্যাকটিক ( Acid Lacticum ) ,
* ক্যালি নাইট্রিকাম ( Kali Nitricum ) ,
* হেলোনিয়াস ( Helonias Dioica ) ,
* রস – এরোম্যাটিক ( Rhus Aromatica ) ,
* ক্রিয়োজোট ( Kreosotum ) ,
* মস্কাস ( Moschus ) ,
* ন্যাট্রাম- সালফ ( Natrum Sulphuricum ) ।
লক্ষণ সাদৃশ্যে চিকিৎসায় হইল আমাদের প্রধান হাতিয়ার তাই লক্ষণ সাদৃশ্য হইলে মেটিরিয়া মেডিকার সকল ঔষধই প্রয়োজন হইতে পারে । তবে জটিল রোগীর, রোগের চিকিৎসায় মায়াজমের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে চিকিৎসা শুরু করিলে খুব সহজেই সফল হওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস । সকল পাঠকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানেই সমাপ্ত ।
বিঃ দ্রঃ – যে কোন পরামর্শের জন্য নীচের ঠিকানায় যোগাযোগ
করুন।
বাংলাদেশ হোমিও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র
Bangladesh Homoeo Health Service Centre
বিঃদ্রঃ এখানে অর্জিনাল জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তান, ইন্ডিয়ান ও বি,টি ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
সিরিয়াল ও যাবতীয় তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- ০১৭৫৩-৩১৯৪১৭, ০১৯১৫০৬০৬৭৮
ঠিকানা: উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, বোদা বাজার জামে মসজিদের পশ্চিম পার্শে, মাতৃসদন রোড, বোদা।