30/09/2025
জিন-যাদুর প্রভাব: কেন আক্রান্তরা এ সময় বেশি কষ্ট পান?
পূজার মৌসুম এলে দেখা যায়—অনেক ভাই-বোন যারা আগে থেকেই জিন বা যাদুর প্রভাবে ভুগছেন, তারা হঠাৎ করেই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারও তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয়, কারও শরীর ভারী ও ক্লান্ত হয়ে যায়, আবার কেউ দুঃস্বপ্ন দেখে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। অনেকেই বলেন, যেন বুক চেপে ধরা হচ্ছে, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, বা ভেতর থেকে অদৃশ্য কোনো চাপ কাজ করছে।
প্রশ্ন হলো—কেন পূজার সময় এই উপসর্গগুলো হঠাৎ বেড়ে যায়?
মূলত, এই সময় তান্ত্রিক ও যাদুকররা তাদের সাধনা ও যাদুর কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়। পূজা-পার্বণে তারা নতুন শক্তি আহরণ করে এবং পূর্বের যাদুর প্রভাবকে আরও সক্রিয় করে তোলে। ফলে যারা আগে থেকেই যাদুতে আক্রান্ত, তাদের উপর এর প্রভাব দ্বিগুণ হয়ে পড়ে।
কেন বিশেষ করে পূজার সময়?
আমাদের সমাজে যাদু সংক্রান্ত কাজগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হিন্দু তান্ত্রিক ও পুরোহিতদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। ভারতবর্ষ ইতিহাসের দিক থেকেও যাদুর একটি প্রধান কেন্দ্র, বিশেষ করে আসামের কামরূপ কামাখ্যা অঞ্চলটি আজও পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী যাদুর স্থান হিসেবে পরিচিত। পূজা-পার্বণের সময় তান্ত্রিকরা নানা উপায়ে তাদের যাদুশক্তি বাড়ায়, আর তাদের সাথে যুক্ত জ্বীনরাও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই কারণেই পূজার মৌসুমে আক্রান্ত মুসলিম ভাই-বোনদের শারীরিক ও মানসিক কষ্ট বেড়ে যায়।
এ সময় করণীয় কী?
1. রুকইয়া বেশি বেশি করা – শরঈ রুকইয়া সবচেয়ে কার্যকর। নিজের উপর, পরিবারের উপর এবং ঘরের উপর নিয়মিত রুকইয়া পড়তে হবে।
2. আল্লাহর কাছে দোয়া করা – নামাজের সিজদায়, রাতের শেষ অংশে এবং আজানের সময় বারবার আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
3. কুরআন তিলাওয়াত করা – সূরা বাকারা, আয়াতুল কুরসি, সূরা ফালাক ও সূরা নাস বেশি বেশি পড়তে হবে। এগুলো শয়তানের শক্তি দুর্বল করে দেয়।
4. যিকির ও ইস্তিগফার – নিয়মিত আল্লাহকে স্মরণ করা, আস্তাগফিরুল্লাহ বলা এবং দরূদ শরীফ পাঠ করা।
5. ধৈর্য ধারণ করা – কষ্ট বেড়ে গেলে হতাশ হওয়া যাবে না। বরং ধৈর্য ধরে রুকইয়া ও ইবাদত চালিয়ে যেতে হবে।
শেষ কথা
পূজার সময় যাদুর প্রভাব বেড়ে গেলেও, আল্লাহর সাহায্য চাইলে কোনো শক্তিই আপনাকে ক্ষতি করতে পারবে না। নিয়মিত রুকইয়া, দোয়া ও কুরআনের সাথে যুক্ত থাকলে আল্লাহ তাআলা দ্রুত আরোগ্য দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
আসলে এই কষ্টও আল্লাহর কাছে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার একটি সুযোগ। ধৈর্য, ইবাদত আর দোয়ার মাধ্যমেই এই কঠিন সময় জয় করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জ্বীন-যাদুর শয়তানি প্রভাব থেকে হেফাজত করুন।