19/04/2020
Long Post Alert:
প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
সালাম ও শুভেচ্ছা সবাইকে।
উল্লেখিত ছবিটি নিজেকে ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট। তারপরও কিছু ফ্যাক্টস যোগ করছি।
১) করোনা মহামারীতে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২২ লক্ষের অধিক মানুষ আক্রান্ত, নিহত কমপক্ষে ১৫৪,৩৫০ জন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২,১৪৪ জন আক্রান্ত, প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৮৪ জন (প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশিও হতে পারে)।
যেটা উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই রোগটি কোন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ধনী, গরীব, শিক্ষিত, নিরক্ষর বুঝে না। বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যেখানে এটি আঘাত করেনি।
২) মহামারীর কারনে সারা বিশ্বই স্থবির হয়ে আছে। বন্ধ হয়ে আছে জরুরি সেবা ব্যতীত যাবতীয় কার্যক্রম, অফিস, আদালত, ফ্যাক্টরি সহ খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা হচ্ছে ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত।
আন্তর্জাতিক মনিটারি ফান্ড (IMF) বলছে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে। আমেরিকাতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২০ লক্ষের ও বেশি মানুষ বেকার ভাতার আবেদন করেছে, যা পৌঁছাতে পারে ৫কোটির উপরে। সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দায় চাকরি হারাবে লাখো মানুষ, অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব, যার প্রভাব পড়বে প্রত্যেক মানুষের জীবনে।
৩) অর্থনৈতিক মন্দার অপর পিঠে আছে অভাব, অনটন। ব্যবসায় লস করে বা চাকরি হারিয়ে মানুষ অঅভাবগ্রস্থ হবে৷ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাবে, যা চলে যেতে পারে সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে। আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় সম্পদের অসম বন্টনের কারনে কারো ঘরে থাকবে খাবার সহ অন্যান্য পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ, অন্যদিকে খাবারের অভাবে না খেয়ে দিনপার করবে স্বল্প আয়ের বা সীমিত আয়ের লোকজন।
৪) ক্ষুধার্ত মানুষ যে কোন উপায়ে তার জীবিকার সন্ধানে রাস্তায় নামবে, খুঁজে বে দুমুঠো ভাত, হোক স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক, সৃষ্টি হতে পারে অরাজকতা।
এগুলো বলার উদ্দেশ্য আপনাদের আতঙ্কিত করা নয়। বরং সাবধান করা। আগে থেকে প্রস্তুতি থাকলে আপনি, আমি, আমরা সবাই হয়তো এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও সামলে নিতে পারবো। তাহলে সমাধান কি?? আসুন নিজেরাই বের করি কিভাবে ভালো থাকা যাবে সামনের অনিশ্চিত দিনগুলোতে।
ক) কোন অবস্থায় ই জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবেনা। যতটুকু সম্ভব ঘরে আবদ্ধ রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। অসুস্থ হলে কোনমতেই লুকিয়ে রাখা যাবেনা, লুকালেই বরং বিপদ।
খ) যারা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট রিসিপিয়েন্ট বা সিকেডি পেশেন্ট, আমাদের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জরুরি/ প্রয়োজনীয় ঔষধ এর সুব্যবস্থা করে রাখতে হবে, যেন বর্তমান পরিস্থিতি চলমান থাকলে আমাদের ঔষধের জন্য দুশ্চিন্তা পেরেশানিতে না পড়তে হয়। ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আমাদের #বিকেপিএ এর গ্রুপের এডমিন পোস্ট গুলোতে পাবেন।
গ) সম্পদ বা খাবারের ক্ষেত্রে মিনিমালিজম (যত কম ব্যবহার করে বেঁচে থাকা যায়) নীতি আমাদের এই পরিস্থিতিকে কিছুটা স্বাভাবিক রাখতে পারে। এটা নিয়ে বিস্তারিত এক ভাই বলেছেন ফেসবুকে, যা আমি এই লেখার পরবর্তী অংশে যোগ করে দিয়েছি৷
ঘ) আল্লাহপাকের কাছে বেশি করে দোয়া করা যেন এই পরিস্থিতিকে খুব দ্রুত স্বাভাবিক করে দেন। একে অন্যের পাশে থাকা, কারো প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানো৷ সহযোগিতা ও সহমর্মিতা উক্ত পরিস্থিতিতে আমাদের সকলকে সহায়তা করবে।
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে হেফাজত করুন, সুস্থ রাখুন।
সকলে ভালো থাকুন, সাবধানে থাকুন।
©bkpa
ছবিঃ সংগৃহীত
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
"কয়েকটা খারাপ কথা বলব যাদের মনে আঘাত লাগবে তারা সসম্মানে ইগনোর করবেন।
সবাই ঘরে থাকলে ফসল ফলবেনা, ফললেও সেটা আপনার ৮/১০ তালা উঁচু বাসাতে উড়ে আসবেনা। ফ্যাক্টরি বন্ধ মানে সব জিনিসের উৎপাদন বন্ধ থাকবে বা খুবই কমে যাবে। করোনা পরবর্তী পৃথিবী কি হতে যাচ্ছে আমরা কেউই জানিনা কিন্তু এটা জানি যে ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্রাকচার পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। সেই অবস্থা কিভাবে ফেস করতে হবে আমরা জানিনা।
সেজন্য আপনি আগামী কয়েক মাস কিভাবে সারভাইভ করতে পারেন?
- ভুনা, কষানো তরকারি খাওয়া আপাতত বন্ধ রাখুন।
পাতলা ঝোলের তরকারি খাওয়া অভ্যাস করুন।
- কয়েক পদ না খেয়ে এক বা দুই পদ দিয়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- যাদের বাচ্চা মুরগির রান, গরুর রান ছাড়া খায়না তারা বাচ্চাদের অভ্যাস চেঞ্জের ট্রাই করুন।
সিম্পল খাবারের অভ্যাস করুন। ( এটা অবশ্য সবসময়ের জন্যই প্রযোজ্য)
- যে কদিন এখনো কমবেশি সবজি পাওয়া যাচ্ছে সবজি খান। কদিন পরে পাবেন কিনা নিশ্চয়তা নেই, একেবারেই নেই।
- মাছ মাংস গুচ্ছের করে রাঁধবেন না। একটু কম করেই নাহয় খান।
- বাসায় বসে আছি বলে পোলাও গোস্ত খেয়ে পেট ভরে বিলাসিতা করবেন না।
সামনে যে দিন আসছে আলু বাজারে পাবেন কিনা গ্যারান্টি নেই!
সো কিপ্টা হোন।
- বাসায় আছেন নানান নতুন রান্না করছেন, এক্সপেরিমেন্ট করছেন, নতুন আইটেম করছেন।
বেশ ভালো সময় কাটছে।
কদিন পরে যখন বাজারে আটা, ময়দা, চিনি পাবেন না তখন খাবেন কি?
- নিজেরা এবং বাসার বাচ্চাদের খাবারের অভ্যাসে বদল আনুন।
- আমার টাকা আছে আমি ইচ্ছামত খরচ করবো এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন। ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন না হলে টাকা খেয়ে তো বাচতে পারবেন না!
- ঘরে বসে আছেন বলেই বেলায় বেলায় নিত্য নতুন নাস্তা বানিয়ে খেয়ে জমানো শুকনো খাবারের মজুদ শেষ করে ফেলবেন না। সামনে আরও কঠিন দিন আসছে।
- ভোগবাদী আচরণ থেকে বের হয়ে মিনিমালিস্ট আচরণ করুন।
- নিজে কম খেয়ে বাচ্চাকে বেশি খাওয়ানোর চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। সিচুয়েশন অনুযায়ী আচরণ করুন।
বাচ্চাকেও জরুরি অবস্থার সাথে এডাপ্ট করান।
- যাদের বাড়িতে গাছপালা লাগানোর সুযোগ আছে তারা নিজেদের সবজি কিছু হলেও নিজেরা উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন, কাজে লাগান।
- খাবার অপচয় করবেন না। এক দানাও না।
* কাপড়ের দাম বেড়ে যাবে। সেজন্য পুরাতন কাপড় যেটা আপনার প্রয়োজন হবেনা ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখুন এবং অবশ্যই যত্ন করে। অনেক মানুষ আছে যাদের কাপড় কেনার ক্ষমতা থাকবেনা। আপনার, আপনার বাচ্চার পুরাতন কাপড়ে তাদের লজ্জা নিবারণ হবে।
অনেকে মাইন্ড করতে পারেন যে কম খাওয়া পরা নিয়ে কেন এতবার বলছি। আগামীতে কেমন দিন আসছে যেহেতু জানিনা একটু কম কম খাওয়া পরার অভ্যাস করলে সমস্যার কিছু নাই ভাই। সব নরমাল হলে নাহয় আবার বেশি বেশি খেয়েপরে উসুল করে নিলেন।🙂 আপদকালীন সময়টা বুঝে চলুন। বিলাসী আচরণ পরিহার করুন।
দান বা ত্রাণ দেয়ার সময় চলে যাচ্ছেনা বরং আসছে। সো হুড়োহুড়ি করে রাস্তায় দান করা শুরু করবেন না। আগে নিজের চারপাশে দেখুন কার কি অবস্থা। অবস্থা বুঝে সাহায্য করুন।
After corona the world won't be the same!
Be minimalist, be safe
Bayazid Sikder এর পোস্ট থেকে কপিড।"