23/05/2025
বর্তমানে ভাতের মতো যে ঔষধটি সবাই খায় সেটি হচ্ছে ওমিপ্রাজল। অনেকে আবার বলে- এটার নাকি কোন সাইড ইফেক্ট নাই !!! আরে ভাই--- পানি ছাড়া সব কিছুরই সাইড ইফেক্ট আছে। পানিও কিন্তু Water intoxication করতে পারে
পেটে ব্যথা, বুকে ব্যথা, মাথায় ব্যথা, মাথায় গ্যাস হওয়া (!), বদহজম, মুখে টক ভাব এমনকি বিয়েবাড়িতে বেশি খেয়ে ফেলার জন্যও মানুষ এই ড্রাগটি খায়। আমার একজন প্রিয় স্যারের কাছে একটি ঘটনা শুনেছিলাম। একবার একজন রোগী স্যারের কাছে এসে বললেন- "বুকে ব্যথা। গ্যাসের ঔষধ দেন স্যার।" কিন্তু স্যার রোগীর সামগ্রিক অবস্থা দেখে কিছুটা আঁচ করেন যে বড় কোন ঝামেলা আছে। স্যার ECG করতে দেন। ECG দেখে Myocardial infarction (হার্ট এটাক) সন্দেহ করেন স্যার। এবং আল্টিমেটলি Troponin I পজিটিভ আসে ঐ রোগীর। অর্থাৎ হার্ট এটাকের রোগী ভাবতেছিল- এটা আহামরি কিছু না !!! ওমিপ্রাজল খেলেই সেরে যাবে !!!
যাই হোক, পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসরণ করে oxyntic cell.
Histamine, Acetylcholine, Gastrin- এই তিন ধরণের স্টিমুলাসে নিঃসরণ হয় এই HCl.
Histamine via H2 receptor
Acetylcholine via M1 receptor
Gastrin via CCK2 receptor
অর্থাৎ আমরা যদি H2, M1 কিংবা CCK2 receptor ব্লক করতে পারি, তাহলেই এসিড সিক্রেসন কমে যাবে।
H2 receptor antagonist: Ranitidine, Cimetidine
M1 receptor antagonist: Telenzepine, Pirenzepine
CCK2 receptor antagonist: Proglumide, CI-988
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আসলে ঐ তিন স্টিমুলাসে এসিড সিক্রেসন হয়ে একটি কমন পাথওয়েতে অপেক্ষা করতে থাকে, যেখানে থাকে একটি পাম্প। এই পাম্পের কাজ হলো - এসিড পাকস্থলীতে ঢেলে দেয়া। এই পাম্পটি খুব বেশিদিন হয়নি আবিষ্কার হয়েছে। ১৯৭০ এর দশকে আবিষ্কার হয় এই পাম্প। এটাকে বলা হয় "Proton pump". যার কেমিক্যাল নাম: H+/K+ ATPase.
অর্থাৎ এই প্রোটন পাম্পকে ইনহিবিট করা গেলে সেটা হবে এসিড সিক্রেসন ইনহিবিট করার সবচেয়ে মোক্ষম হাতিয়ার।
১৯৭৫ সালে সর্বপ্রথম আবিষ্কার হয় Timoprazole. যেটা অন্য কোন স্টিমুলাস ছাড়াই proton pump কে inhibit করে এসিড সিক্রেসন ইনহিবিট করতে পারে। এইজন্য এইধরণের ড্রাগের নাম দেওয়া হয়েছিল- Proton Pump Inhibitor (PPI). কিন্তু টিমোপ্রাজল PPI কে বাজারে ছাড়া সম্ভব হয়নি।
তারপর চলতে থাকলো গবেষণা। টিমোপ্রাজলের ৪ এবং ৬ নম্বর কার্বনে একটি করে methoxy group (CH3O) আর ৩ এবং ৫ নম্বর কার্বনে একটি করে methyl group (CH3) যোগ করা হয়। ফলে তৈরি হলো OMEPRAZOLE. ১৯৮৮ সালে এটি প্রথম বাজারে ছাড়া হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। এরপর থেকেই চলছে এই ওমিপ্রাজল।
বাংলাদেশে ২০ মি.গ্রা. এবং ৪০ মি.গ্রা. ক্যাপসুল, ট্যাবলেট, ইন্ট্রাভেনাস ইঞ্জেকশন ফর্মুলেশনে পাওয়া যাচ্ছে এই ওমিপ্রাজল। যদিও ইন্ডিকেশন ছাড়াই পাবলিক বিনাকারণে যত্রতত্র ইচ্ছামত খাচ্ছে এই ঔষধ, কিন্তু এইকথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে - PPI আবিষ্কারের পর PUD, H. pylori gastritis, GORD, ZES প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় বিপুল অগ্রগতি এসেছে।
©White Coat Gallery