04/08/2025
টাইফয়েড জ্বর সালমোনেলা টাইফি (S.Typhi) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই রোগের জীবানু খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে, মানুষের শরীর ছাড়া এরা বাঁচতে পারে না।
টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণসমূহ :
১.সাধারণ জ্বর থেকে দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ তাপমাত্রা জ্বর (১০৩-১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট)
২.ক্লান্তি, মাথা ব্যাথা, কাঁপুনি
৩.শরীর ব্যথা
৪.ক্ষুধামন্দা, কাশি
৫.পেট ব্যথা (কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারে বা নাও হতে পারে)
৬. বমি বমি ভাব বা বমি
৭. অসুখের দ্বিতীয় সপ্তাহে লিভার এবং প্লীহা বড় হয়ে যেতে পারে
৮. কিছু রোগীর ক্ষেত্রে লালচে দানা দেখা যেতে পারে তবে প্রথম সপ্তাহের পর থেকে
টাইফয়েড জ্বর কিভাবে ছড়ায় :
সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।
টাইফয়েড জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কাদের বেশি?
১.ঘণবসতিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, বস্তি বা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী
২. এন্ডেমিক এলাকায় ভ্রমণকারী
৩.আউটব্রেক পরিস্থিতির মধ্যে থাকা জনগোষ্ঠী ৪.নিম্নস্বাক্ষরতার হার যেখানে অনিরাপদ পানি ও অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন রয়েছে।
৫. শিশুর বয়স ৫-১৫ বছর।
টাইফয়েড জ্বরের ঝুঁকির কারণসমূহ :
১. দূষিত ও অনিরাপদ খাবার পানি
২.অপরিকল্পিত পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা
৩. নিম্নমানের স্বাস্থ্যবিধি
টাইফয়েড জ্বরের ভয়াবহতা :
১.মারাত্মক জটিলতা এমনকি মৃত্যু হতে পারে
২. যে সকল রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় এদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫% জটিলতা ঘটতে পারে। যারা দুই সপ্তাহ বেশি সময় ধরে অসুস্থ থাকার পরেও কোন চিকিৎসা গ্রহণ করেনি তাদের মধ্যে এই জটিলতা গুলো আরও প্রকোপ আকার ধারণ করে। সবচেয়ে বেশি জটিলতা গুলো হলো অন্ত্রের রক্তপাত, অন্ত্রের ছিদ্র, শক ও ব্রেনের ইনফেকশন। এদের মধ্যে ১৮-৪৩% রোগী মারা যায়।
৩. কার্যকর এন্টিবায়েটিক চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায় তবুও সম্পন্ন সুস্থ হতে সময় লাগে ও কষ্টসাধ্য।
৪. পক্ষান্তরে এন্টিবায়োটিক ছাড়া মৃত্যুহার প্রায় ২০% পর্যন্ত হতে পারে
৫. পরিবারের আর্থিক ক্ষতি সাধন করে, সময় এবং উৎপাদনশীলতা নষ্ট করে বহু দীর্ঘমেয়াদি জলিলতা সৃষ্টি করে।
টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের উপায় :
১. পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা, খাদ্য প্রস্তুতকারীদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলার প্রবণতা।
২. টাইফয়েড টিকা দেওয়া
৩. Extensive drug Resistance (XDR) ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় সালমোনেলা টাইফির চলমান প্রাদুর্ভাব দিন দিন বেড়েই চলছে। এটা প্রতিরোধে সত্যিকার অর্থে ভ্যাক্সিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৪. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক গ্রহণ
৫. শৌচাগার ব্যবহার করার পর সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধৌত করা এবং খাবার প্রস্তুত করার পূর্বে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা
৬. কাঁচা খাবার গ্রহণ না করা, যদি পানি নিয়ে সন্দেহ হয় তা ফুটিয়ে পান করা, ফল ভালো করে ধুঁয়ে খাওয়া।
কার্টেসি: অজানা স্কলার