Dr Subhajit Paul

30/11/2025

24/11/2025

Gdmrng..💐💐

22/11/2025

সুপ্রভাত..💐💐

21/11/2025

কুয়াশা মাখা সবুজ দ্বীপ থেকে সুপ্রভাত..💐💐

18/11/2025

সুপ্রভাত..😊💐

17/11/2025

#কার্তিক_ফেলা

ঘুম জড়ানো চোখে সদর দরজা খুলতেই এক রাশ বিরক্তি মনের মধ্যে ছেয়ে যায় পৃথার । দরজার বাইরে ফুট তিনেকের কার্তিক- মূর্তিমান হয়ে দাঁড়িয়ে ! কয়েক মিনিটের জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে । কি করা উচিৎ- পুকুর পাড়ে রেখে আসবে? না কি ঘরে তুলে…

বয়স চল্লিশ ছুঁতে বেশি বাকি নেই । ত্রিদিবের তো পঁয়তাল্লিশ । কম চেষ্টা করেনি তারা । বন্ধ্যাত্বর কারণ খোঁজা ও তার প্রতিকার করার জন্য ছুটে বেরিয়েছে কলকাতার প্রায় সব ইনফার্টিলিটি ক্লিনিকে । কোথাওই কোনও শারীরিক সমস্যা পাওয়া যায়নি । দুজনের কারোরই না । সকলেই বলেছেন মানসিক চাপ কমাতে । স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে । দূরে থাকার জন্য ঘুরেও এসেছেন, ব্যবসার অনেক ক্ষতি করেই । সে তো গেল এক রকম । তারপর শুরু অন্য যন্ত্রণা: পর পর কৃত্রিম প্রজননের প্রচেষ্টা অসফল । কিটের লাল দাগ দুটো আশার আলো জ্বালিয়ে তিন বার ইউএসজির “নো কার্ডিয়াক অ্যাকটিভিটি” তে নিবিয়ে দিয়েছে সে আলো ।তার পর থেকে আর যায়নি তারা কোনও ক্লিনিকে । এবং আস্তে আস্তে আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সবার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছে এই শেষ চার পাঁচ বছরে ।

ত্রিদিব দিনের মধ্যে প্রায় ১২-১৪ ঘণ্টা ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন । পৃথা তিন তলা বাড়িটা পরিষ্কার রাখা, রান্না বান্না আর ছাদে ফুলের বাগান- এই নিয়েই ভুলে থাকার চেষ্টা করে । খাতায় কলমে পঞ্চায়েত এলাকা হলেও শহুরে হাওয়া লেগেছে মানুষের মনে । তাই এখন আর প্রতিবেশীরাও খুব বেশি কথা বার্তা বলে না । সে ভালো একদিক থেকে… নিজের মনে ভাবে পৃথা..

“এই দ্যাখো মা বলেছিলাম পুজো শেষ হয়নি, তুমি তাহলে আমার ক্যাপ বন্দুক টা বার করে দাও মা?দেবে তো বলো ?”..চার পাঁচ বছরের একটা বাচ্চার কথায় হুঁশ ফেরে পৃথার । পাশের গলি দিয়ে ভিতরে ঢুকে একেবারে শেষ বাড়ির ছেলে, ভালো নাম জানেনা পৃথা; ডাক নাম টুপাই । গলিতে ক্রিকেট খেলে , আর মাঝে মাঝেই বল কুড়োতে চলে আসে । ভারি মিষ্টি ছেলে ।

“চল টুপাই দেরি হয়ে যাচ্ছে..” হাত ধরে টান দেয় তার মা ।

“তা কোথায় চললে মা ব্যাটায় এই সকালে?”

“আর বোলো না দিদি,” টুপাই এর মা রূপা হাত টা না ছেড়েই বলতে থাকে..” শ্বশুরমশাই এর ডায়ালিসিস শুরু হয়েছে জানো তো । টুপাই এর বাবার তো ট্রেনিং । আমাকেই নিয়ে যেতে হবে । স্কুল খোলা থাকলে ওখানেই অনেকটা সময় ম্যানেজ হয়ে যেত, কিন্তু আজ থেকে কদিন স্কুল ও বন্ধ, বড় ক্লাসের টার্ম টেস্ট । তাই আমার দাদা বৌদির কাছে রেখে আসছি…ওদের ও আজ বেরোনোর ছিলো , আমার জন্য ওরা আটকা পড়ে গেলো …”

“ এটা কি ঠাকুর জেম্মা? বিশ্বকম্মা?”, মিষ্টি আধো বুলিতে জিজ্ঞেস করে টুপাই।

“ এ হলো কার্তিক, অনেকটা বিশ্বকর্মার মতোই “, হেসে ফেলে পৃথা , “এসো, কাছে এসে দেখো..”

“ না গো দিদি থাক পরে দেখবেখন, দেরি হয়ে যাচ্ছে..”

“রূপা , তোমার আপত্তি না থাকলে ওকে আমার কাছে রেখে কাকাবাবু কে নিয়ে যেতে পারো । দাদা বৌদিকে জানিয়ে দাও ফোন করে “- পৃথার মনের মধ্যে জমতে থাকা বিরক্তি টা এক লহমায় উধাও !

“ তাহলে তো খুবই ভালো হয় দিদি, তোমার অসুবিধা হবে না ?“, রূপা যেন হাতে চাঁদ পায় ।

“ আমাকে না, আমাদের টুপাই বাবু কে জিজ্ঞেস করো, জেম্মার কাছে থাকতে তার আপত্তি আছে কিনা , আর তুমি হসপিটালে যাওয়ার পথে ওর জলের বোতল টা শুধু দিয়ে যাও । টুপাই বাবুর বড় গ্লাসে জল খেতে অসুবিধা হতে পারে ।”

সেই শুরু, এরপর রূপা টুকটাক কোথাও বেরোলে টুপাই কে পৃথা দিদির বাড়ি দিয়ে যায় । আর টুপাই কেমন গল্প করেছিলো, কার্তিক ঠাকুর সাজিয়েছে, কাঁসর বাজিয়েছে, পুজোর প্রসাদ খেয়েছে, আবার জেম্মা বলেছে পরের বছর আবার হবে - সেসব শোনায় ।

একদিন টুপাই কে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রূপা বলে, “ দিদি, একটা কথা বলার ছিলো “..
“ আমার কাছে আবার এতো সঙ্কোচ কেন “, হাসে পৃথা । এ কয় মাসে মেয়েটি তার দিব্যি বন্ধুর মতো হয়ে গেছে । বয়সে যদিও খানিক ছোটই হবে ।

“ আসলে তুমি এতো যত্ন করে টুপাই কে রাখো শুনে টুপাই এর স্কুলের কিছু বাচ্চার মা বলছিলো ওরাও যদি এরকম কাউকে পেতো, তাই আমি ভাবছিলাম, আর ওর বাবাও বলছিলো, তোমার বাড়ির নীচের তলায় ঘর গুলো তো খালিই আছে; যদি একটা ওই ক্রেশ না ডে কেয়ার কি বলে না, ওটা চালু করো? করবে দিদি?বাচ্চা জোগাড় করে আনার দায়িত্ব আমার । আর আমার সন্ধানে ভালো আয়া মাসি ও আছে । আমার বৌদির বোনের বাচ্চা কে দেখতো, ওরা তো ব্যাঙ্গালোরে চলে যাচ্ছে তাই সামনের মাস থেকে কাজ খুঁজছে.. একবার ভেবে দেখো …চ টুপাই, পড়তে বসবি এবার.. জেম্মা কে টা টা করে দে..”

অন্য মনস্ক ভাবে টুপাই এর দিকে হাত নাড়াতে নাড়াতে পৃথা দেখতে থাকে ওই তো ওই ঘরে, বারান্দায়, ওই উঠোনে.. কার্ডিয়াক অ্যাকটিভিটি-হৃদস্পন্দন.. এক ছুটে উপরে উঠে গিয়ে ত্রিদিব কে কল করে “ আমাদের শোরুমের ইন্টেরিয়র, রং এসবের কাজ করেছিলো ওই যে ভদ্রলোক, ওনার নাম্বার টা মেসেজ করো এক্ষুনি, আবার ভুলে যেও না, এক্ষুনি পাঠাও …”

✍️ডঃ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়

11/11/2025

মনের সব অন্ধকার শিক্ষার আলোও দূর করতে পারেনা।