এক্তারপুর - Ektarpur

এক্তারপুর - Ektarpur Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from এক্তারপুর - Ektarpur, Ektarpur, Chakdaha.

🔶 ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকে দেশ জুড়ে শুরু করতে চলেছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা স্পেশাল ইনটে...
24/07/2025

🔶 ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকে দেশ জুড়ে শুরু করতে চলেছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) ।।

এই প্রক্রিয়ায় বুথ লেভেল অফিসার বা BLO আপনার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে একটা ফরম ফিল আপ করাবে ,সঙ্গে লাগবে ডকুমেন্ট ( উল্লিখিত ১১ টা ডকুমেন্ট এর মধ্যে যেকোনো একটি)।। সেগুলি হল:-

১. পৌর সংস্থা, পঞ্চায়েত বা অন্য কোনও সরকারি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত জন্ম শংসাপত্র

২. বিদেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা পাসপোর্ট

৩. স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন বা উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট

৪. সরকার কর্তৃক জারি করা পরিচয়পত্র বা পেনশন অর্ডার (কেন্দ্রীয়/রাজ্য/পিএসইউ)

৫. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অনুরূপ কর্তৃপক্ষের স্থায়ী বসবাসের (বাসস্থান) সার্টিফিকেট

৬. বন অধিকার আইনের অধীনে বন-অধিকার সনদপত্র

৭. উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারি করা জাতিগত শংসাপত্র (এসসি/এসটি/ওবিসি)

৮. এনআরসি ডকুমেন্ট (যেখানে প্রযোজ্য)

৯. স্থানীয় সংস্থা কর্তৃক জারি করা পারিবারিক নিবন্ধন

১০. সরকারি অফিস থেকে জমি বা বাড়ি বরাদ্দের সার্টিফিকেট

১১. ১৯৮৭ সালের পূর্ববর্তী সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র

*এই অনুশীলনের জন্য আধার, প্যান এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স স্বতন্ত্র প্রমাণ হিসেবে প্রযোজ্য নয়।*

**পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে যে SIR বা 'Special Intensive Revision' বা 'বিশেষ নিবিড় সংশোধন' চালু হতে চলেছে আগামী অগাষ্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকে সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে- ২০০২ সালে যাদের পুরোনো SIR এ নাম উঠেছিল তাদের কোনো কাগজই দেখাতে হবে না। দেখাতে হবে তার পরবর্তীতে যাদের নাম উঠেছিল অর্থাৎ ২০০৩-২০২৫ এর মধ্যে। আর এই কাগজগুলোর মধ্যে থাকছে ১১ টি ডকুমেন্ট আঁধার,প্যান এবং রেশন কার্ড ছাড়া। আর হ্যাঁ ওই ১১ টি ডকুমেন্টের যেকোনো একটি দেখালেই চলবে......
চারিদিকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে যে জন্ম প্রমাণপত্র বা বার্থ সার্টিফিকেট দেখাতেই হবে, সেটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য করা হচ্ছে... জন্ম শংসাপত্র আর বাকি ১০ টি ভ্যালিড ডকুমেন্টের মতোই একটি শুধুমাত্র... কেউ ওটা থাকলে দিতে পারে,না থাকলে আর বাকি ১০ টির যেকোনো একটি দিলেও হবে।
২০০২ সালে ইতিমধ্যেই তালিকাভুক্ত ভোটার এবং তাদের সন্তানদের জন্য কোনও অতিরিক্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই। যাদের ১১টি প্রমাণ নেই, তাদের ক্ষেত্রে নির্বাচনী নিবন্ধন কর্মকর্তা (ERO) মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করতে পারেন।

**এই প্রক্রিয়ায় তিন ধরনের আবেদনকারী থাকবেন ।
১)- *জুলাই,১৯৮৭ এর আগে জন্মগ্রহন করা ভোটার*।
*এদের শুধু নিজের ডকুমেন্ট দিলেই হবে ওই ১১ টার মধ্যে।*

২)- *(১৯৮৭ - ২০০২) এর মধ্যে জন্ম নেওয়া ভোটার ।*
*এদের দিতে হবে বাবা অথবা মায়ের ডকুমেন্ট ওই ১২ টির মধ্যে,(তবে ২০০২ সালে আমাদের রাজ্যে হওয়া শেষ SIR এ যদি তাদের নাম থেকে থাকে সেই লিস্ট এর পাতা টি দিলেই আর কোনো ডকুমেন্ট দরকার নেই)।।*
৩)- *২০০২ এর পর জন্ম নেওয়া ভোটার।।*
*এদের ক্ষেত্রে লাগবে বাবা ও মায়ের উভয়ের ই ডকুমেন্ট ।*
*এই ক্ষেত্রেও ২০০২ এর শেষ SIR তালিকায় তাদের নাম থাকলে সেই তালিকার পাতা টি জমা দিলেই হবে ।।*

যদি কেউ বাইরের রাজ্যেও থাকেন কোনো চিন্তা নেই, আপনি অনলাইনেও ফরম ফিলাপ করতে পারবেন।
**উল্লেখ্য যে অনুপ্রবেশকারি আর শরনার্থি কিন্তু গুলিয়ে ফেলবেন না।*
অপপ্রচারে কান দিবেন না।
ভয় পাবেন না।।

**এসআইআরের প্রচেষ্টা হল "কোনও যোগ্য নাগরিক বাদ না পড়েন এবং কোনও অযোগ্য ব্যক্তি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হন তা নিশ্চিত করা।"*

এর আগেও অনেকবার :-ইসিআই অনুসারে, ১৯৫২-৫৬, ১৯৫৭, ১৯৬১, ১৯৬৫, ১৯৬৬, ১৯৮৩-৮৪, ১৯৮৭-৮৯, ১৯৯২, ১৯৯৩, ১৯৯৫, ২০০২, ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে নতুন ভোটার তালিকা তৈরির উদ্দেশ্যে দেশের সমস্ত বা কিছু অঞ্চলে অনুরূপ এসআইআর পরিচালিত হয়েছিল।

*পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার শেষবারের মতো SIR করা হয়েছিল ২০০২ সালের জানুয়ারিতে, বামফ্রন্ট শাসনকালে, এবং তাই ২৩ বছর পর এই নতুন SIR পরিচালিত হবে।

*তবে ফর্ম কিন্তু প্রত্যেককেই ফিলাপ করতে হবে, নয়ত ভোটার তালিকা থেকে আপনার নাম বাদ হয়ে যাবে*l

** সকলে এই মোবাইল এ্যাপ গুলো থেকে সাবধান থাকবেন।
13/01/2025

** সকলে এই মোবাইল এ্যাপ গুলো থেকে সাবধান থাকবেন।

01/01/2025

সকলকে জানাই নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
স্বাগতম 2025

🌼 হ্যামিলনের_বাঁশিওয়ালা".  গল্পের মেসেজটা কী,,,,? সাধারণ প্রতিশোধের গল্প হিসাবে পড়া হয়। জার্মান দেশের এক শহরের নাম হ্...
11/10/2024

🌼 হ্যামিলনের_বাঁশিওয়ালা". গল্পের মেসেজটা কী,,,,?

সাধারণ প্রতিশোধের গল্প হিসাবে পড়া হয়। জার্মান দেশের এক শহরের নাম হ্যামিলন। হ্যামিলনে অনেক ইঁদুর ছিল। মানুষ ইঁদুরের যন্ত্রণায় অস্থির। তখন আসল এক বাঁশিওয়ালা।

বাঁশি বাজিয়ে সে যেতে লাগল আর ইঁদুরেরা তার বাঁশি শুনে ঘরের কোনা কাঞ্চি থেকে বের হয়ে তার পিছু নিল।

এক পর্যায়ে বাশিওয়ালার নির্দেশে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা গেল দলে বলে।

এরপর মেয়রের কাছে তার পাওনা টাকা চাইল বাঁশিওয়ালা, যে চুক্তিতে তাকে ইঁদুর তাড়ানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। যেহেতু কর্ম সমাধা হয়ে গেছে, তাই একজন পলিটিশিয়ানের মত কাজ করলেন মেয়র, টাকা দিলেন না।

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা প্রতিশোধ নিবে জানাল।

সেইন্ট জন ও পল দিবসে যখন বড়রা চার্চে ব্যস্ত ছিল তখন আবার ফিরে এলো বাঁশিওয়ালা।

রাস্তায় নেমে সে তার আরেক রঙচঙা বাঁশি বের করে শুরু করল বাজানো। এই বাঁশির সূর্য শুনে মন্ত্রমুগ্ধের মত শিশুরা নাচতে নাচতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলো। তারা বাঁশিওয়ালার পিছু নিল। আর বাঁশিওয়ালা তাদের নিয়ে হারিয়ে গেলো পাহাড়ের দিকে।

এই গল্প একটা পুরানো, বহুল প্রচলিত গল্প। সবচাইতে পুরান সোর্স ১৩০০ সালের। গল্পটি তারও আগের। বিভিন্ন তত্ত্ব আছে এই গল্পের ইতিহাস নিয়ে। এখনো গল্পটি মানব সমাজে বিরাজমান, সার্চ এঞ্জিন এনালিসিসের টুল এসইএমরাশ দ্বারা দেখলাম, এখনো প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার বার পৃথিবীর মানুষ সার্চ করেন ইন্টারনেটে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালাকে নিয়ে।

অকৃতজ্ঞের শাস্তি, এটা গল্পের ভাসমান মেসেজ। কিন্তু অন্য লেয়ারে গল্পটারে দেখলে, যদি দেখেন এই হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা ব্যক্তিটা কে তখন গল্পটা আরেক ভাবে বুঝার জায়গা তৈরি হয়। তার এই বাঁশিতে এত ক্ষমতা কীসের? কেন বাচ্চারা ও ইঁদুরেরা তারে অনুসরণ করেছিল?

ফ্রেঞ্চ আমেরিকান দার্শনিক রেনে জিরার্দের মিমেটিক তত্ত্ব দ্বারা বিশ্লেষণ করলে, হ্যামিলনের বাশিওয়ালাকে ধরতে হবে মডেল হিসেবে। মডেল হচ্ছে সে যাকে অন্য মানুষেরা অনুকরণ করছে। গল্পের বাচ্চারা অনুকারক।

জিরার্দের তত্ত্বের মূল ইনসাইট এমন, মানুষের নিজস্ব কোন ডেজায়ার নেই। সে অন্যের ডেজায়ার অনুকরণ করে।

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালাকে বাচ্চারা যখন অনুসরণ করলো, তখন তাদের কোন সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা ছিল না। মডেল যা করেছে, তারা সেদিকে গেছে।

জিরার্দ লেখেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা নেই, মডেল আমাদের হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। একজন ব্যক্তি তার মডেল দ্বারা সম্পূর্ণ বিনাশও হতে পারে, অনুকরণ সর্বদাই সেই জিনিশ যা আমাদের চিনতে ভুল করায়।

কাকে অনুকরণ করছেন, এই জিনিশ গুরুত্বপূর্ণ নিজের জীবনের জন্য, কারণ আপনি তারে আপনার হয়ে সিদ্ধান্ত নেবার জায়গায় বসিয়ে দিচ্ছেন। তাকে বানিয়ে দিচ্ছেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। সে তৈরি করছে আপনার ডেজায়ার।

অন্য মানুষের প্রাপ্তি, সাফল্য, ভোগ, লাইফস্টাইল, জীবনাদর্শ, জীবন যাপনের তরিকা ইত্যাদি দেখে মানুষেরা নিজেদের জন্য ঐসব ডেজায়ার তৈরি করে। যারে সে ফলো করছে সে যদি এমন সব কাজকর্ম করে যা অনুকারকের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর, অনুকারক তা বুঝতে পারবে না।
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা গল্পে আরেকটা ইন্টারেস্টিং অংশ আছে। ১৩০ জন শিশু বাঁশিওয়ালার পিছে পিছে গিয়েছিল যারা চিরতরে হারিয়ে যায়। তিন জন শিশু শুধু রয়ে যায়, যারা গল্পটি বলেছিল নগরবাসীর কাছে। এই তিনজনের মধ্যে, একজন ছিল পঙ্গু, একজন অন্ধ, একজন কানে শুনত না।

অর্থাৎ, এই তিনজন তাদের তিন শারীরিক অবস্থার জন্য বাঁশিওয়ালাকে অনুসরণ করতে পারে নি।

জিরার্দ লেখেন, যার যত বেশি মিমেটিক ডেজায়ার থাকবে, তত বেশি এই ডেজায়ার বাস্তব জীবনে প্রবেশ করবে, এবং তত বেশি এটা তার জীবনকে ধ্বংস করবে। ব্যক্তিটি হয়ে উঠবে তত বেশি অসুখী।

ভোগবাদ উৎসাহিত করতে, নিরন্তর চাহিদা তৈরি করতে মানুষের সমাজে যারা বিখ্যাত, যারা জনপ্রিয়, যাদেরকে মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মডেল হিশাবে দেখে, তাদেরকে দিয়ে নানাবিদ পণ্যের ডেজায়ার তৈরি করার কাজ করানো হয়। এর জন্য আছে ফিল্ম-বিনোদন ইন্ড্রাস্টি ও নানা ধরণের বিজ্ঞাপন।

অনুকরণ থেকে শতভাগ বাঁচার উপায় নাই যেহেতু এভাবেই সামাজিক মানুষ তৈরি হয়েছে। কিন্তু মানুষ কারে অনুকরণ করবে বা করছে, এ ব্যাপারে সচেতন হতে পারে। যদি না হয়, তাহলেও সে অনুকরণ করছে, না জেনে। সচেতন অনুকরণ তারে তার নিজের সাইকোলজিক্যাল অবস্থান বুঝতে সাহায্য করবে। সে কী করছে এবং কেন। এইজন্য প্রাচীন স্টয়িক দর্শন মডেল ঠিক করতে বলে। স্টয়িকদের জন্য মডেল ছিলেন সক্রেটিস, ক্যাটো দ্য ইয়াংগার, এবং মিথিক্যাল হারকিউলিস। বিভিন্ন ধর্মেও মডেল নির্ধারণে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কারণ তাদের জানা ছিল সচেতনে না করলে অচেতনে মানুষ মডেল ঠিক করবে ও তাদের দ্বারা ডেজায়ার তৈরি করবে, প্রভাবিত হবে, কিন্তু মনে করবে প্রভাবিত হচ্ছে না, নিজেই কাজ করছে।

মডেল খারাপ হতে পারে অনুকারকের জন্য। আবার সব যে সকল সময় হ্যামিলনের বাশিওয়ালার মত এমনো না।

মডেলকে অনুকরণের আরেকটা দিক আছে, মিমেটিক রাইভালরি, যা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিল মিমেটিক তত্ত্বের জগত লেখায়, এখানে হালকা করে উল্লেখ করে যাই।

মানুষ যখন এমন একজনের অনুকরণ করে, যে তার সাথে একই তলে অবস্থান করে, তখন তাদের মধ্যে কনফ্লিক্ট শুরু হয়। একসময় দেখা যায়, তারে আগে লাইক করত কিন্তু এখন জানপ্রাণ দিয়ে শত্রুতা করে যাচ্ছে।

সে ওই ব্যক্তি নিয়া অবসেসড, তার মত হতে চায়। কিন্তু এই হতে গিয়ে দেখে, যারে দেখে তার এই চাওয়ার জন্ম নিল, সেই লোকটাই তার প্রতিদ্বন্ধী। আবার লোকটা যদি বহু আগের কেউ হয়, ধরা যাক সক্রেটিস, সেইক্ষেত্রে মিমেটিক রাইভালরির জায়গা থাকে না।

#𝑪𝒐𝒍𝒍𝒆𝒄𝒕𝒆𝒅

-:হন্ত-দন্ত সংবাদ:-......................................................................বাড়ি থেকে তোমরা যখন পড়তে আসো ...
16/05/2022

-:হন্ত-দন্ত সংবাদ:-......................................................................
বাড়ি থেকে তোমরা যখন পড়তে আসো তখন যদি কিছু না খেয়ে আসো তাহলে মা তোমাদের কি বলে?-কিচ্ছুটি দাঁতে কাটলো না,খালিপেটে পড়তে চলে গেলো।

তাহলে এখান থেকেই বুঝতে পারছো আমাদের দাঁতের কাজটা কি?কাজটা হলো কাটাছেঁড়া করা।কি কাটাছেঁড়া করবে?না শক্ত খাবার।আর কি!
কারণ তরল তো আর কাটাছেঁড়া যায় না।তরল চেবানোও যায় না।
দেখোতো তাহলে কথায় কথায় দাঁতের কতগুলো কাজ বেরিয়ে পড়লো।
কি কি বলো?কাটা,ছেঁড়া আর চেবানো।

কিন্তু সব দাঁতই কি কাটে?নাকি সব দাঁতই ছেঁড়ে?নাকি সবাই চেবায়।না,কেউ সব কাজ একসাথে করে না।প্রতিটা দাঁতের আলাদা আলাদা কাজ আছে।কেউ কাটে,কেউ ছেঁড়ে আর কেউ চেবায়।

এবার হাঁ করো।দরজা খুললেই সামনে যে দুইজোড়া ভাইকে উপরে নীচে মাড়ির মধ্যে লেগে থাকতে দেখতে পাও তার নাম কি জানো?তার নাম-ইনসিসর(Incisor)
তারপরেই ওদের গা ঘেঁষে যে উল্টো পাহাড়ের মতন উপরে নীচে দুদিকেই একজন করে ভাই থাকে তারা কে জানো?দাঁতসমাজে তারা সবথেকে হিংস্র,গুন্ডা টাইপের।তাদের নাম-ক্যানাইন(Canine)।
ঠিক তাদের পরেই থাকে একটু ভদ্রগোছের দুই ভাই।তাদের নাম-প্রিমোলার(Premolar)।
আর তাদের পাশে থাকে গম্ভীর প্রকৃতির তিনভাই।এদেরকে দাঁতসমাজে খুব রাশভারী লোকজন হিসেবে দেখা হয়।এদের নাম-মোলার(Molar)।

তাহলে এবার তোমরা পরপর একটু সাজাও তো।দেখো দরজার সামনে দুইজন(2),তারপর একজন গুন্ডা(1),তারপর দুইজন ভদ্র(2),তারপর গম্ভীর তিনজন(3)।

তাহলে একটি দিকের ফ্যামিলিতেই আমরা পেলাম আটজনকে(8 জন)।এই আটজনের আবার সেম টু সেম ডুপ্লিকেট কপি আছে তিনটে ফ্যামিলি।তাহলে মোট 8 গুণ 3= বত্রিশজন মেম্বার(32) জন।

এই বত্রিশজনের পরিবারকে আমরা ডাকি ডেন্টাল ফরমুলা নামে।
টেনিদার কালিসিঙ্গী মহাভারতের এক ঘায়ে বাঘের বত্রিশটা দাঁত ফেলে দিয়েছিলো সে তো তোমরা পড়েইছো কুট্টিমামার বাঘ শিকার গল্পে।বাঘের বত্রিশটা আছে কিনা জানিনা,তবে মানুষের যে আছে তা তোমরা নিজেদের দন্তসমাজে জিভ বুলিয়েই দেখে পরখ করে নিতে পারো।

এবার তোমাদের বলি একটা দাঁতের কথা।কারণ একটার মতনই সবকটাকে গঠন।শুধু তাদের চেহারাগুলো আলাদা আলাদা।
প্রথমেই দাঁতের উপরে যে শক্ত সাদা জিনিসটা পাও,যেটাকে চকচকে রাখার উপায় আজকাল বিভিন্ন টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনে দেয়,তার নাম হলো এনামেল।এই এনামেল কিন্তু মোটেই নরমসরম নয়।কারণ এ'ই হলো একা কুম্ভ যে গড় রক্ষা করে,যেমন তোমাদের অভিভাবক।তারপরের যে জিনিসটা(স্তরটা) তোমরা দেখতে পাওনা সেটা হলো ডেন্টিন।ইনি এনামেলের থেকে একটু নরম,আর এনার শরীর ক্যালশিয়াম আর ফসফেট আয়ন দিয়ে তৈরি,যেমন তোমাদের পরিবারের বয়স্করা।তারপরেই আসে নরমসরম একটি তুলতুলে অংশ যার নাম পালপ্,যেমন বাড়ির মধ্যে তোমরা ছোটোরা।কিন্তু দেখো তোমাদেরকে নিয়ে যেমন সবার আশা আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে থাকে তেমনই পালপ্-কে কিন্তু জড়িয়ে থাকে দাঁতের ভিতরের নার্ভ,শিরা-উপশিরা এবং সমস্ত যোগকলাগুলি।আর এই পালপ্ কি দিয়ে তৈরি জানো?জিলাটিন নামক একরকম নরম জেলির মতন অংশ দিয়ে।তোমরা বড়দের কাছে শুনে থাকবে "রুট ক্যানাল" নামে একরকম সার্জারির কথা।এটা কিন্তু এই পালপ্ অংশেই ডাক্তারবাবুরা করে থাকেন।এরও অনেক কারণ আছে,দাঁতের ফুটো,দাঁতের ব্যথা,দাঁত কনকন অনেকরকম লক্ষণেই এগুলি ওনারা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

এবার তাহলে গোড়ার কথায় আসি,দাঁতের গোড়াটা কিসে লেগে আছে দেখো-মাড়ির মধ্যে তাই না?আর মাড়িটা কিসের মধ্যে লেগে আছে বলোতো?চোয়ালের হাড়ের মধ্যে,তাইতো?
তাহলে পরপর যদি আমরা একটি দাঁতকে পরতে পরতে খুলতে থাকি তাহলে কি কি পাবো বলোতো?
এনামেল,ডেনটিন,পালপ্ আর যেখানে দাঁতটা শক্ত করে আসন পেতে বসে থাকে তাকে বলে জিঞ্জিভা বা গাম টিস্যু।
এরও নীচে মাড়ির ভিতরে দাঁতটা মাংসের মধ্যে যেটা দিয়ে শক্তভাবে বসে থাকে তা হলো সিমেন্টাম(Cement)।
আর এই সিমেন্টামকে ফুঁড়ে পালপের মধ্যে দিয়ে নার্ভ আর রক্তবাহী নালিগুলো চলে যায় একদম গভীরে,চোয়ালের হাড়ে।
দাঁতটাকে এবার সেই টাইটানিকের ডুবোপাহাড়ের সাথে তুলনা করো তো!দেখো পাহাড়ের উপরের অংশটাকে আমরা বলি ক্রাউন(Crown),মাঝের যে অংশটা তাকে বলি নেক(Neck) আর গভীরে যে অংশটা ঢোকে তাকে বলি রুট(Root)।

তবে দাঁতের কাজ কিন্তু মারাত্মক।ইনসিসর বলে যিনি তিনি কাটেন(শিশুকালে এই দাঁতটাই হাসলে দেখা যায়)।তারপর ক্যানাইন হিংস্র,সে মাংসটাংস ছিঁড়ে খাবার কাজটা সারে।তারপর আসে প্রিমোলার,ভদ্রলোকের মতন একটু আধটু চিবিয়ে দেয়,তারপর আসে আসল যাঁতাকল,মোলার।এরা একেবারে খাবার চিবিয়ে ছাতু করে দেয়।
তাহলে দাঁতের কাজ,গঠন,ব্যবহার তোমরা জানলে।আর দাঁতকে সবসময় ভিজিয়ে রাখে আমাদের মুখের লালা।একমাত্র জেরোস্টোমিয়া(মুখের ভিতরের শুকনো অবস্থা)অবস্থায় এর অন্যথা ঘটে।সেটা তোমাদের ডিজিজ অ্যান্ড ডিসঅর্ডারস্ ক্লাসের জন্য তোলা থাক্।

ছোট্ট করে দুটো কথা বলেই দাঁত দেখানো বন্ধ করবো।সেটা হলো ম্যাক্সিলারী নার্ভের শাখাগুলি উপরের দাঁতগুলিকে সেনসেশন দেয়।সেনসেশন মানে হলো অনুভূতি।আর নীচের দাঁতগুলিকে সেনসেশন দেয় ম্যান্ডিবুলার নার্ভ।আর এদের মোটর নার্ভের ক্রিয়ার ফলে আমরা চেবাতে(ম্যাস্টিকেশন) পারি।আর দাঁতের মধ্যেকার নার্ভের কারণেই আমরা দাঁতেও কিন্তু গরম ঠান্ডা অনুভব করতে পারি।আর দুটি চোয়ালের যে যোগটা দুই কানের কাছে ঘটে তার নাম টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট(টেম্পোরাল হাড়,ম্যান্ডিবল মানে চোয়াল,তাই একসাথে ওই নাম)।এখানে একটা অবস্থা দেখা যায় তার নাম "লক জ" যাতে হাঁ আর বোজানো যায় না।যদিও সেটা তোমাদের প্রবলেমস্ অব বোন-এর ক্লাসে দেখাবো।

তাই বলি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝো,দাঁত মাজো,দাঁতের যত্ন নাও,ঠান্ডা-গরম-ঠান্ডা এরকমভাবে কম খাও।তবে মুখের হাসিটা কিন্তু দন্তবিকশিত করেই করো,কারণ হাসলে শুনেছি ছাত্রছাত্রীদের মানে যারা পড়াশুনা করে তাদের দাঁত ভালো থাকে...আর মিচকি হাসি,খিলখিলে হাসি,দুষ্টু হাসি,ফিচকে হাসি,অট্টহাসি যা মনে আসে করো।

সৌরভদার ভালোবাসা নিও।আর হন্ত-দন্ত হয়ে কোনোরকমে দাঁত মেজো না।সকালে ও রাতে ধীরে ধীরে মাজো।হাসিটা বজায় থাকবে...
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤

Credit: Sourav Bhattacharya

-:অগ্ন্যাশয়ের অন্দরমহলে:-.......................................................................আমাদের পেটের ভিতর কি আছ...
16/05/2022

-:অগ্ন্যাশয়ের অন্দরমহলে:-.......................................................................
আমাদের পেটের ভিতর কি আছে জিজ্ঞাসা করলে তোমরা হয়তো অনেকেই বলবে নাড়িভুঁড়ি।কিন্তু নাড়িভুঁড়ি বা তাকে সাহায্য করা এমন কিছু ভদ্রলোক অঙ্গ পেটের ভিতর থাকেন যাদের আমাদের ভীষণ দরকার পড়ে। লিভার,ক্ষুদ্রান্ত্র,বৃহদন্ত্র,পাকস্থলী,কিডনি এসব ছাড়াও আর এক ভদ্রলোক আছেন যার নাম অগ্ন্যাশয়।আধার কার্ডে যার নাম হলো প্যানক্রিয়াস(Pancreas)।

কিন্তু এই প্যানক্রিয়াসকে কেন এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে?শোনো তাহলে-এই প্যানক্রিয়াস বাবুটির শরীরে কিন্তু দুরকম কাজ হয়-অন্তঃক্ষরণ এবং বহিঃক্ষরণ।তার জন্য তার শরীরে দুরকম গ্রন্থি বা গ্ল্যান্ড(Glands) আছে।
অন্তঃক্ষরা (Endocrine) আর বহিঃক্ষরা (Exocrine)।
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিগুলি কি করে জানো?আইলেটস্ অব ল্যাঙ্গারহ্যানস্ বলে ওর গায়ে একটা জায়গা আছে সেখান থেকে ও রক্তে হরমোন সাপ্লাই করে।আর বহিঃক্ষরা গ্রন্থিগুলি থেকে বের হয় পাচক রস যেগুলিকে বলে ডাইজেস্টিভ এনজাইমস্।এই এনজাইম বা উৎসেচকগুলো তাদের গলিঘুঁজিমার্কা রাস্তাঘাট (জালের মতন ছড়ানো নালী বা ডাক্ট) দিয়ে একটা মেইন রাস্তার মোড়ে এসে দেখা করে।সেই মোড়মাথার রাস্তাটার নাম মেইন প্যানক্রিয়্যাটিক ডাক্ট।
তোমরা ক্লাস টেনে পড়েছিলে মনে আছে অগ্ন্যাশয়কে মিশ্র গ্রন্থি বলে কেন?এটার উত্তর হলো এই অন্তঃক্ষরা আর বহিঃক্ষরার মিশ্র কাজের জন্য।

এবার আসি আইলেটস্-এর কথায়।সমুদ্রের মাঝে ছোটো ছোটো দ্বীপ মিলে যেমন দ্বীপপুঞ্জ তৈরি হয়,তেমনি প্যানক্রিয়াসের ভিতরে চার রকম আলাদা আলাদা কোশ দিয়ে তৈরি এই আইলেটস্ অব ল্যাঙ্গারহ্যানস্।এর চারটে কোশের নাম-আলফা,বিটা,ডেলটা আর সি(C) কোশ।

প্রথমে আসি বিটা সেলের কথায়।কারণ এই সেলটাই সবথেকে বেশি পরিমাণে থাকে।এর ভিতর থেকে ক্ষরিত হয় ইনসুলিন নামক একটা হরমোন।এই যে তোমরা আজকাল চারদিকে ডায়াবেটিসে ভোগা রুগীদের দেখো তা কিন্তু এই ইনসুলিন হরমোনেরই কম ক্ষরণের ফলে ঘটে।কারণ ইনসুলিন আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।অনেকে আবার ব্লাড সুগার অত্যধিক থাকলে ল্যাবে তৈরি ইনসুলিন ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে নেয়।সে বলবো পরের ক্লাসে।আজকে বইয়ের কথাটুকু বলি।ইনসুলিনের আরও কিছু কাজ আছে যেমন ধরো লিভারকে বেশি পরিমাণ গ্লুকোজ বের করতে বারণ করা,পেশীগুলিকে অ্যামাইনো অ্যাসিড গ্রহণে সাহায্য করা,রক্তের মধ্যে বেশি শর্করা মিশে গেলে তাকে ধরে-বেঁধে একটা সীমার মধ্যে রেখে বাড়াবাড়ি করতে না দেওয়া ইত্যাদি।কিন্তু ধরো কারোর শরীরে ইনসুলিন কাজ করে না,তখন?রক্তে তো শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে।আর তখন যে অবস্থাটা হবে তাকে আমরা জানি হাইপারগ্লাইসেমিয়া (hyperglycemia)নামে। ডাক্তারবাবুদের ভাষায় "ডায়াবেটিস মেলিটাস"।এটাকে Type II ডায়াবেটিস বলে।কিন্তু এটা একদিনে হয় না,রক্তে যদি ক্রনিক্যালি শর্করার পরিমাণ বেড়েই থাকে,তাকে ওষুধ দিয়ে কমাতে হয়।এই অবস্থাটাকে সাধারণ লোকজন বলে দেখবে "আমার তো সুগার আছে"।আসলে সুগার আমাদের সবারই আছে।না থাকলে তো অসুস্থ হয়ে যেতাম সবাই।কিন্তু তোমরা কি বলবে?বলবে - ইনসুলিন কম ক্ষরণ হচ্ছে।এর ক্ষরণের রেঞ্জ দেখা হয় আট ঘন্টা উপোস (Fasting) এবং খাবার খাওয়ার দু'ঘন্টা পরে (PP-Post Prandial)।

এরপর আসি আলফা কোশের কথায়।আলফা আবার কি করে?না ইনসুলিনের সাথে ওর একটু বিরোধিতা আছে।ইনি আবার গ্লুকাগন নামে একটি হরমোন বের করেন যা কিনা লিভারকে গ্লুকোজ আর কলা থেকে ফ্যাটি অ্যাসিড বের করতে উৎসাহ দেয়।তাই রক্তে শর্করা খুব কমে গেলে যে অবস্থাটা হয় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) তার থেকে আমাদের বাঁচায় কে?গ্লুকাগন দাদা।
আর ডেল্টা কোশের ছোট্ট কথা বলি,এর বিরাট কাজ হলো সোমাটোস্টেটিন তৈরি করা।আবার সোমাটোস্টেটিনের কাজ হলো ইনসুলিন আর গ্লুকাগনকে ভয় দেখিয়ে ওদের ঘর থেকে বেরোতে না দেওয়া।এই ঘটনাটাকে বলে ইনহিবিটরি ফাংশন (Inhibitory Function)।

এ তো গেলো কোশের কথা।এবার প্যানক্রিয়াসের অন্দরমহলের কথা।এখন কাজের কথায় আসি,অগ্ন্যাশয়ে তিনরকম উৎসেচক বের হতে দেখা যায়-লাইপেজ,প্রোটিয়েজ এবং অ্যামাইলেজ।
লাইপেজ লিভারের থেকে বাইল বের হবার পর তার সাথে হাত মিলিয়ে ফ্যাটকে ভাঙতে আর শোষণে সাহায্য করে।ইনি কমে গেলে ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো কাজ করতে পারে না।ওদিকে প্রোটিয়েজ কি করে,না প্রোটিনকে ভাঙে আর আমাদের ইন্টেস্টাইনকে ব্যাকটেরিয়া,পরজীবি,প্রোটোজোয়া এসবের হাত থেকে বাঁচায়।ইনি কমে গেলে ইন্টেস্টাইনাল ইনফেকশন,অ্যালার্জি,প্রোটিনের হজমের
গোলমালের কারণে হওয়া অসুবিধা বাড়ে।আর অ্যামাইলেজ নাম শুনেই তো বুঝতে পারছো ইনি শর্করাকে ভাঙেন।লালা কোম্পানীর খতিয়ানে তোমরা তো এর কথা শুনেইছো।ইনি মুখেও থাকেন।ইনি কমে গেলে অপাচ্য শর্করা ডায়ারিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তাহলে প্যানক্রিয়াসের কাজকর্মের কথা কিছুটা তোমাদের বললাম।তোমাদের পরের ক্লাসে বলবো প্যানক্রিয়াসের ইনার্ভেশন,ডাক্টাইল ফাংশনের বিস্তারিত গোলমাল,ইনফেকশনের,ক্যান্সারের ফলে কি কি রোগ বা অসুবিধা হতে পারে।

07/02/2022

জঙ্গলের রাজা বাঘ মশাই ঢাকঢোল পিটিয়ে জানিয়ে দিলো - "কোনো শিশুকে নিরক্ষর রাখা চলবে না।। সবার জন্য যথাযথ শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে।।"

সব ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে।। পড়াশুনা শেষ হলে,, সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।।

সব বাচ্ছারা স্কুলে এ্যডমিশন হয়ে গেলো।। রাজামশাইয়ের পার্সোনাল স্কুল ,, সবাইকে যথাযথ শিক্ষা দেওয়া হবে।।

শুরু হলো সর্ব শিক্ষা অভিযান!!

হাতির বাচ্চা স্কুলে এলো।‌। বাঁদর,, মাছ,, কচ্ছপ,, বিড়াল,,উঁট ,, জিরাফ,, সবার বাচ্ছা স্কুলে পৌঁছে গেলো।।

শুরু হলো ধুমধাম করে পড়াশোনা।‌।

"ফাষ্ট ইউনিট টেষ্ট" হলো।। হাতির বাচ্ছা ফেল।।

- "কোন সাবজেক্টে ফেল ??" হাতি এসে প্রশ্ন করে।‌।

-- "গাছে ওঠা" সাবজেক্টে ফেল করেছে।।"

হাতি পড়লো মহা চিন্তায়।। তার ছেলে ফেল ?? এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।।

শুরু হলো খোঁজাখুঁজি,, ভালো টিউটর পেতেই হবে।। সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে কোনো রকম কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।।

হাতির এখন একটাই টেনশন,, যেভাবেই হোক,, ছেলেকে গাছে চড়া শেখাতে হবে !! "গাছে ওঠা' সাবজেক্টে টপার করে তুলতে হবে।।

ফাষ্ট সেশন অতিক্রান্ত।। ফাইনাল রেজাল্ট আউট হলো।। দেখা গেলো - হাতি,, উঁট,, জিরাফ,, মাছ,, সবার বাচ্ছা ফেল।। বাঁদরের বাচ্ছা টপার হয়ে গেছে।।

প্রকাশ্য মঞ্চে বিভিন্ন গেষ্টদের আমন্ত্রিত করে,, বিরাট অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলো।। সেখানে টপার হিসাবে বাঁদরের বাচ্ছার গলায় মেডেল পরিয়ে দেওয়া হলো।।

বাঁদর আনন্দে আত্মহারা।। তার ছেলে টপার হয়েছে।। এ গাছ থেকে সে গাছে,, কি ভীষণ লাফালাফি করে চলেছে।।

চুড়ান্ত অপমানিত হয়ে হাতি,, উঁট,, জিরাফ,, নিজ নিজ সন্তানকে দারুণ পিটুনি দিলো।। এতো টিউশন,, এতো খরচ,, এর পরেও চূড়ান্ত অসম্মান!!
তারা মেনে নিতে পারলো না।।

-- "ফাঁকিবাজ,, এতো চেষ্টা করেও তোর দ্বারা গাছে চড়া সম্ভব হলো না ?? নিকম্মা কোথাকার।। শেখ,, বাঁদরের বাচ্ছার কাছে শিক্ষা নে,, কিভাবে গাছে চড়তে হয়।।"

ফেল কিন্তু মাছের ছেলেও হয়ে গেছে।। সে আবার প্রত্যেক সাবজেক্টে ফেল,, কেবলমাত্র "সাঁতার" কাটা ছাড়া।।

প্রিন্সিপাল বললো -- "আপনার সন্তানের এ্যটেন্ডেন্স প্রবলেম।। পাঁচ মিনিটের বেশী ক্লাসে থাকতে পারে না।।"

মাছ নিজের সন্তানের দিকে ক্রোধান্বিত হয়ে তাকিয়ে রইলো।।

বাচ্ছা বলে --" মা-গো,, দম নিতে পারি না,, ভীষণ কষ্ট হয়।। আমার জন্য জলের মধ্যে কোনো স্কুল দেখলে হতো না ??"

মাছ বলে -- "চুপ কর বেয়াদব।। এতো ভালো স্কুল আর কোথাও খুঁজে পাবি না।। পড়াশোনায় মন দে,, স্কুল নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।।"

হাতি,, উঁট,, জিরাফ,, নিজের নিজের ফেলিওর বাচ্ছাকে পিটুনি দিতে দিতে বাড়ি ফিরে চলেছে।। পথিমধ্যে বুড়ো খেঁকশিয়ালের সঙ্গে দেখা।।

শিয়াল বলে -- "আহা,, তোমরা মারো কেনো,, ছোট ছোট বাচ্ছাদের ??"

উঁট বলে - "মেরেই ফেলবো একে।। আমার মানসম্মান কিছু বজায় রাখলো না।।"

শিয়াল বলে -- "কি হয়েছে সেটা তো বলো ??"

হাতি বলে -- "এত বড়ো শরীর নিয়ে,, গাছে চড়তে পারলো না।। বাঁদরের ছেলে টপার হলো,, মান ইজ্জত কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না।।"

শিয়াল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।।
-- "আচ্ছা,, তোমরা গাছে চড়তে পারো?? "

জিরাফ বলে -- "আমরা তো নিরক্ষর।। তখন এসব স্কুল-টুল ছিলো না।। থাকলে শিখে নিতাম,, অবশ্যই গাছে চড়তে পারতাম।।"

শিয়াল বলো -- "তোমাদের গাছে চড়ার কি প্রয়োজন সেটাই বুঝতে পারলাম না‌।। শোনো হাতি,, তুমি নিজের বিশালাকার শুঁড় উঠিয়ে ধরো,, গাছের সবচেয়ে বড়ো ফলটি পেড়ে ভক্ষণ করো।। তোমার গাছে ওঠা লাগবে না।।"

-- "উঁট ভাই,, তোমার অনেক উঁচু ঘাড় রয়েছে।। ঘাড় বাড়িয়ে দাও,, গাছের সর্বশ্রেষ্ঠ ফল,, পাতা পেড়ে খাও।।"

-- "বোন মাছ,, তোমার সন্তানকে নদীর স্কুলে ভর্তি করে দাও।। ওকে মনভরে সাঁতার কাটতে শেখাও।। দেখবে,, একদিন তোমার ছেলে নদী অতিক্রম করে সমুদ্রে পাড়ি দেবে।। সাত সমুদ্র পার করে,, তোমার নাম উজ্জ্বল করে দেবো।। ওকে রাজার স্কুলে মোটেও পাঠিও না।। ও মারা যাবে।।"

★★★★

মনে রাখতে হবে,, শিক্ষা আপনার সন্তানের জন্য,, শিক্ষার জন্য আপনার সন্তান না।।

আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক শিশুর মধ্যেই কিছু না কিছু স্পেশালিটি দিয়েই পাঠিয়েছেন।‌।
আমাদের দায়িত্ব হলো,, সেটা খুঁজে বের করা।। তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া।। তাহলেই দেখবেন,, সে নিজেই নিজের গন্তব্য খুঁজে নেবে।।

হাতির বাচ্ছাকে জোর করে গাছে চড়াতে যাবেন না।। মনে রাখবেন,, মাছের বাচ্ছা জল বিহীন স্কুলে গেলে,, দম ফেটে মারা যাবে।।

শিক্ষা-দীক্ষা,, খেলা-ধুলা,, নাচ-গান,,
শিল্প-কলা,, অভিনয়,, ব্যাবসা,,যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক,, সন্তানের প্রতিভার মূল্যায়ন করে নিন।‌। ওদের ইচ্ছেগুলো চিনে নিন,, ওদের প্রতিভার মূল্য দিন।।

আপনার দায়িত্ব শুধু একটাই,, সন্তানকে সদাচারণ,, নৈতিকতা,, মূল্যবোধ,, মানবতার শিক্ষা দিয়ে যাওয়া।।

গ্যারান্টি দিলাম,, আপনার সন্তান যেখানেই থাকুক,, যাই করুক,, কখনো বিপথগামী হবে না।।
(সংগৃহীত )

সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস********************************************ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র ...
26/01/2022

সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস
********************************************

ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী তারিখে ভারত শাসনের জন্য ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনের পরিবর্তে ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে। এটি ভারতের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

কার্যকরী হওয়ার ঠিক দুই মাস আগে, ১৯৪৯ খ্রীষ্টাব্দের ২৬শে নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয়। ২৬শে জানুয়ারী দিনটিকে সংবিধান কার্যকর করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দে ঐ একই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও গৃহীত হয়েছিল।

এই দিনটি ভারতের তিনটি জাতীয় দিবসের অন্যতম। অন্য দুটি জাতীয় দিবস যথাক্রমে স্বাধীনতা দিবস ও গান্ধী জয়ন্তী। এই দিন সারা ভারতেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানটি হয় নতুন দিল্লির রাজপথে। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।

১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায়। এই স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে পরিচালিত, প্রায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ অহিংস অসহযোগ আন্দোলন ও আইন অমান্য আন্দোলন। স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয় যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে ব্রিটিশ ভারত ভেঙ্গে গিয়ে কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এর অন্তর্গত অধিরাজ্য হিসেবে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হয়। ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হলেও দেশের প্রধান হিসেবে তখনও বহাল ছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান ছিল না; ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে কিছু রদবদল ঘটিয়েই দেশ শাসনের কাজ চলছিল। ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দের ২৮শে আগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভীমরাও রামজী আম্বেদকর। ৪ঠা নভেম্বর ১৯৪৭ তারিখে কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়। চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর ১১ মাস ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ২৪শে জানুয়ারী ১৯৫০ সালে গণপরিষদের ৩০৮ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে-লেখা দু'টি নথিতে (একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি) স্বাক্ষর করেন। এর দুদিন পর সারা দেশব্যাপী এই সংবিধান কার্যকর হয়।

সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রধান কর্মসূচী পালিত হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লীতে। এই দিন রাজপথে আড়ম্বরপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজধানী নতুন দিল্লীতে কুচকাওয়াজ হয় রাষ্ট্রপতির আবাসস্থল রাষ্ট্রপতি ভবনের নিকটবর্তী রাইসিনা হিল থেকে রাজপথ বরাবর ইন্ডিয়া গেট ছাড়িয়ে। কুচকাওয়াজ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রপতি রাজপথের একপ্রান্তে অবস্থিত ইন্ডিয়া গেটে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত অজানা সৈন্যদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মারক অমর জওয়ান জ্যোতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর ঐ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বাধীনতা আন্দোলন ও তার পরবর্তী যুদ্ধগুলিতে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষার কাজে নিহত সৈন্যদের প্রতি এইভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মিলিত হন এবং প্রধান অতিথির সাথে রাজপথে অবস্থিত অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসেন। রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষকরা ঘোড়ার পিঠে করে তাঁদের পথপ্রদর্শন করেন।

বীটিং রিট্রীট দ্বারা সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি সূচিত হয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের ৩ দিন পর, ২৯শে জানুয়ারী সন্ধ্যেবেলা বীটিং রিট্রীট অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের সামরিক বাহিনীর তিন প্রধান শাখা ভারতীয় স্থলসেনা, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় বায়ুসেনা এই রিট্রীটে অংশ নেয়। রাজপথের প্রান্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সচিবালয় ও রাষ্ট্রপতি ভবনের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লক ভবন দু'টির মধ্যবর্তী রাইসিনা হিল ও বিজয় চকে এই অনুষ্ঠানটি হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, যিনি অশ্বারোহী 'পিবিজি' (প্রেসিডেন্টস বডিগার্ডস/ রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষক) কর্তৃক পথপ্রদর্শিত হয়ে আসেন। তিনি উপস্থিত হলে পিবিজির অধিনায়ক তাঁর বাহিনীকে জাতীয় অভিবাদনের (স্যালুট) নির্দেশ দেন। এর পর সামরিক বাহিনী কর্তৃক ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। এই সঙ্গীতের পাশাপাশি সম্মিলিত স্থল, জল ও বায়ুসেনার বিভিন্ন ব্যান্ড, পাইপ, ভেরী প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের কুশলীরা অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে সারে জাঁহা সে আচ্ছা প্রভৃতি দেশাত্মবোধক গানের আয়োজনও করেন।
(সৌজন্যে: উইকিপিডিয়া)
----------------------------------------------------------------------------------
প্রজাতন্ত্র হল এমন একটি সরকারি ব্যবস্থা যেখানে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করে থাকে জনগণ বা জণগণের এক অংশ। এই ব্যবস্থাতে কোন রাজা বা রানির অস্তিত্ব নেই। তবে ইংরেজী ভাষায় ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দের প্রতিশব্দ হল ‘REPUBLIC’। এটি এসেছে লাতিন শব্দবন্ধ ‘RESPUBLICA’ শব্দবন্ধটি থেকে, এর আক্ষরিক অর্থ ‘জনগণ সংক্রান্ত একটি বিষয়’। সারা বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে প্রজাতন্ত্র সরকার বর্তমান।

এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গেলে অতীতের ইতিহাস তুলে ধরা প্রয়োজন। ১৮৫৮ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশ ছিল ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে। এইসময় থেকে বিদেশি শাসকদের হাত থেকে মুক্ত করতে এক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের পর ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে এবং জাতীয় উপমহাদেশে ভারত (INDIA) এবং পাকিস্তান (PAKISTAN) নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উৎপত্তি ঘটে। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হওয়ার ফলে জাতিগত সমস্যা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেশে দেখা দেয়। এর ফলে ভারতকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে চরম পর্যায় পৌঁছে যায়।

ঠিক এইসময়ে ভারতে প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত ভারতকে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে এবং দেশ ও জাতির মুক্তি কামনার উদ্দেশ্যে শুরু হয় নানা গঠনমূলক কাজ। এই ভাবে শুরু হয় গণপরিষদ ও সংবিধানের কাজ। একই সঙ্গে সূচনা হল প্রজাতন্ত্রের সূত্রপাত।

গণপরিষদের সূচনা: পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি একটি নির্দিষ্ট সংবিধানের দ্বারা পরিচালিত হয়। কারণ সংবিধানই হল একটি দেশের পরিচালনার অপরিহার্য অঙ্গ বিশেষ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণই সংবিধান রচনা করে থাকে। তবে সমগ্র দেশবাসীর পক্ষে সংবিধান রচনার কাজে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। তাই এই সংবিধান রচনার কাজ একটি সংস্থা করে থাকে। আর এই সংস্থাই দেশবাসীর হয়ে সংবিধান রচনা করে।

গণপরিষদের গঠনের চারটি মূলনীতি: গণপরিষদ গঠনের চারটি মূলনীতি ছিল। ঠিক হয়েছিল যে, গণপরিষদের যাঁরা সদস্য হবেন, তাঁরা প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবে। অর্থাৎ ক্যাবিনেট মিশনের সুপারিশ চারটি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় গণপরিষদ ব্যবস্থা করা হয়।

১। ব্রিটিশ শাসিত প্রদেশ ও দেশীয় রাজ্যগুলি তাদের জনসংখ্যার অনুপাত হিসাবে গণপরিষদে আসন পাবে।
২। গণপরিষদের সফল আসন সাধারণ (অ-মুসলিম ও অ-শিখ) অর্থাৎ হিন্দু, মুসলমান ও শিখ এই তিনটি সম্প্রদায়ের মধ্যে আনুপাতিক ভাগ হবে।
৩। প্রাদেশিক আইন সভার প্রতিটি সম্প্রদায়ের একক হস্তান্তর যোগ্য সমানুপাতিক ভোটাধিকার ভিত্তিতে নিজ নিজ সম্প্রদায় প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবে।
৪। দেশীয় রাজ্যগুলিতে ৯৩জন প্রতিনিধি পাঠাবে, পরে আলোচনা মাধ্যমে ঠিক হয় যে, দেশীয় রাজ্যের অর্ধেক প্রতিনিধি নির্বাচন দ্বারা এবং অর্ধেক প্রতিনিধি মনোনয়নের দ্বারা স্থির করবে।

আর মন্ত্রী মিশন অনুযায়ী ঠিক হয় যে, গণপরিষদে মোট ৩৮৯জন সদস্য থাকবে। এর মধ্যে ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চল প্রদেশ থেকে ২৯২জন, চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশগুলি থেকে ৪জন। এবং দেশীয় রাজ্যগুলি থেকে ৯৩জন প্রতিনিধিত্ব করবে।

গণপরিষদের গঠন: ১৯৪৬ সালে জুলাই মাসের দিকে গণপরিষদের নির্বাচন কার্য অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনমণ্ডলীতে ছিলেন প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যরা। গণপরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৮৯জন। এর মধ্যে দেশীয় রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা ৯৩ জন। ২৯৬টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ২০৮টি আসন, মুসলিম লিগ ৭৮টি আসন লাভ করে। এর ফলে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস বেশিরভাগ আসন লাভ করে। এই গণপরিষদের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ সদস্য রূপে নির্বাচিত হন। তাঁদের মধ্যে হলেন - সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, জওহরলাল নেহরু, ড. বি. আর. আম্বেদকর, মৌলানা আবদুল কালাম আজাদ, চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী, ড. রাধাকৃষ্ণাণ, কে. এম. মুন্সি প্রমুখ।

তবে সংবিধান রচনা ও গণপরিষদের পরিচালনার মূল কর্তৃত্ব ছিল চারজনের হাতে। তাঁরা হলেন :- সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, জওহরলাল নেহরু, মৌলানা আবদুল কালাম আজাদ ও ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ। খসড়া সংবিধানের প্রণয়নের একক কর্তৃত্ব ছিল ড. বি. আর আম্বেদকরের।

গণপরিষদের মূল লক্ষ্য : শুধুমাত্র স্বাধীনতা অর্জনের জন্য গণপরিষদ নয়। আর্থসামজিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাই প্রতিটি জাতির মূল লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছোবার জন্য প্রয়োজন বহিঃশত্রু নিয়ন্ত্রণমুক্ত পূর্ণ স্বাধীনতা। ভারতীয় গণপরিষদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল স্বাধীন ভারতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর রূপরেখা করা।

এই প্রসঙ্গে জওহরলাল নেহরু বলেন, "গণপরিষদের প্রধান কাজ হবে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারতকে স্বাধীন করা, ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে দুই মুঠো অন্ন, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র, এবং প্রতিটি ভারতবাসীকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী আত্মবিকাশের সুবিধা প্রদান করা।" ড. সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণাণ বলেন “একটি সামজিক অথনৈতিক বিপ্লবসাধনই গণপরিষদের মূল লক্ষ্য।”

সংবিধান রচনা : ১৯৪৬ সালে গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল। কিন্তু প্রথম অধিবেশনে মুসলিম লিগের প্রতিনিধিরা যোগদান করেননি। তাঁদের অনুপস্থিতিতে ২০৭জন প্রতিনিধি নিয়ে কাজ শুরু হয়। বিশিষ্ট কংগ্রেস সভাপতি জে বি কৃপালিনীর প্রস্তাবে ড. সচ্চিদানন্দ সিংহকে গণপরিষদের অস্থায়ী সভাপতি করে কাজ শুরু হয়। তারপরে ১১ই ডিসেম্বর গণপরিষদের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ১৩ই ডিসেম্বর জওহরলাল নেহরু ভারতীয় সংবিধানের "লক্ষ্যমূলক প্রস্তাব" উত্থাপন করে ভারতকে “স্বাধীন সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র” বলে অভিহিত করেন। এর মধ্যে ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়ে যায়। এবং ২৯শে আগস্ট সংবিধান রচনার জন্য ‘খসড়া কমিটি’ (DRAFTING COMMITTEE) গঠিত হয়। এই কমিটি সভাপতি ছিলেন ড. বি. আর আম্বেদকর। কমিটি সদস্য ছিলেন এন. গোপালগোস্বামী আয়েঙ্গার, আল্লাদী কৃষ্ণস্বামী আয়ার, কে. এম মুন্সি, ডি.পি খৈতান ও বি. এল. মিত্র প্রমুখ।

১৯৪৮ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী 'খসড়া কমিটি' গণপরিষদের কাছে খসড়া সংবিধান পেশ করে। দীর্ঘ আলাপ আলোচনা ও সংশোধনের মাধ্যমে শেষমেশ ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর গণপরিষদে সংবিধান গ্রহণ করা হয়।

এই সংবিধানে মোট ৩৬৫টি ধারা ও ৮টি তপশিল ছিল। সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছিল ২ বছর ১১ মাস ১৮ দিন। পৃথিবীতে অন্য কোনও দেশে সংবিধান রচনা করতে এত সময় লাগেনি।

পৃথিবীর বৃহত্তম লিখিত সংবিধান হল ভারতের সংবিধান। এর পরে ১৯৫০ সালের ২৪শে জানুয়ারী গণপরিষদের অধিবেশনে ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। আর ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী থেকে ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয় এবং ওই দিন থেকে ভারত একটি ‘সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র' হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর এই দিনটি ভারতের ‘সাধারণতন্ত্র দিবস’ (REPUBLIC DAY) হিসেবে পরিচিত।

সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপনে প্রধান কর্মসূচী হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, নয়াদিল্লিতে। এই দিন দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়, যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ভারতের তিন সামরিক বাহিনী - স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনা। এটি হল ভারতের জাতীয় দিবস।

তবে ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায়(PREAMBLE) ভারতকে একটি ‘সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে - নারী-পুরুষ, জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার ভোগ করবে।

এই কথাটি আজও আমাদের প্রতিটি পাঠ্যপুস্তকের প্রথম বা দ্বিতীয় পাতায় প্রস্তাবনা বলে লিখিত থাকে আর অশোকস্তম্ভ চিহ্ন থাকে।
(সংগৃহীত)

Address

Ektarpur
Chakdaha
741248

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when এক্তারপুর - Ektarpur posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram