16/11/2025
https://www.facebook.com/share/p/17S7GGBxaM/?mibextid=wwXIfr
🍁 দেব সেনাপতি কার্তিকের সন্ধানে।🌿
🦚কার্তিক আর্য দেবতা হওয়া সত্বেও কার্তিকের পুজো হয় সৌর মাস অনুসারে । খ্রীষ্টীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শতকে উত্তর ভারতে ময়ুর বাহন কার্তিকের মূর্তির কিন্তু সন্ধান মেলে।গুপ্ত যুগ এবং পাল যুগেও কার্তিক আরাধনার প্রমাণ আছে। এর থেকে গবেষকরা মনে করেন স্কন্দ পুরানের আগেও পুরাণ কথায় বা লোক কাহিনিতে কার্তিককে দেবতা হিসাবে পুজো করা হত।
🌼ষড়াননং চন্দনলেপিতাঙ্গং
মহামতিং দিব্যময়ূরবাহনম্ |
রুদ্রস্য সূনুং সুরলোকনাথং
ব্রহ্মণ্যদেবং শরণং প্রপদ্যে ||🌿
🌼কেউ তাঁকে বলে স্কন্দ, কেউ বলে মুরুগন আবার কেউ ডাকে সুব্রহ্মণ্য বলে। তিনি আসলে দেব সেনাপতি, যুদ্ধের দেবতা । আমাদের কাছে জনপ্রিয় কার্তিকেয় বা কার্তিক নামে, শিব ও পার্বতীর পুত্র রূপে। দেবলোকে যেখানেই যুদ্ধ হয় সেখানেই কার্তিকের ডাক পড়ে। প্রাচীন ইউরোপে যুদ্ধের দেবতা --- যেমন সেকালের গ্রিকদের আরেস, রোমানদের মার্স, তেমনি আমাদের উপমহাদেশে ভগবান কার্তিক।
🍁 পুরান মতে কার্তিক 🌿
🏵️পুরাণ অনুসারে হলুদবর্ণের কার্তিকের ছটি মাথা। তাই তাঁর অপর নাম ষড়ানন। যুদ্ধের দেবতা বলে নাকি তাঁর ছটি মাথা। চারিদিক থেকে তাঁর লক্ষ্য অবিচল। পাঁচটি ইন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখ, কান, নাক, জিভ ও ত্বক ছাড়াও একাগ্র মন দিয়ে তিনি যুদ্ধ করেন। । তাঁর হাতে থাকে বর্শা-তীর-ধনুক।
পুরাণ মতে তিনি তরুণ সদৃশ, সুকুমার, শক্তিধর এবং সর্বসৈন্যের পুরোভাগে অবস্থান করেন । কার্তিকের বাহন ময়ূর ৷ কৃত্তিকা নক্ষত্রে তাঁর জন্ম হয়েছিল এবং ছয় কৃত্তিকার দ্বারা তিনি পুত্ররূপে গৃহীত ও প্রতিপালিত হন বলে তাঁর নাম কার্তিকেয় বা কার্তিক। তাঁর আরো অনেক নাম আছে যেমন --- গুহ, পাবকি, মহাসেন, ষন্মুখ, কুমার, কুমারেশ, গাঙ্গেয়, বিশাখ, মহাসেন, কুক্কুটধ্বজ, নৈগমেয়। দেবতারূপে কার্তিক একসময়ে সারা ভারতীয় উপমহাদেশেই খুব জনপ্রিয় ছিলেন। ভারতীয় পুরাণগুলির মধ্যে স্কন্দ পুরাণে কার্তিকের বিষয়ে সবিস্তারে লেখা আছে। তাছাড়াও মহাভারতে এবং সঙ্গম তামিল সাহিত্যে কার্তিকের নানা বর্ণনা রয়েছে।
🌼স্কন্দ পুরাণে 🌿
কার্তিকের অনেক গল্প পাওয়া যায় তবে শিব পুরাণে কার্তিকের ইঙ্গিত পাওয়া যায় “কুমার কার্তিক” হিসাবে । দেবসেনাপতি কার্তিকের দেবতা হয়ে ওঠার একটা সুন্দর গল্প আছে । যেমন বর্তমান সময়ে অনেক রাজনেতা বা ব্যক্তি পরিস্থিতি ও দক্ষতায় নিজে থেকেই বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তেমনই দেবসেনাপতি থেকে 'কার্তিক' দেবতা হয়ে উঠেছিলেন। পরম শিব ভক্ত কৃত্তিকাসুরের সাধনায় সাড়া দিয়ে দেবাদিদেব শিব কৃত্তিকার সামনে প্রকট হয়েছিলেন , কৃত্তিকাসুর শিবের কাছে আশীর্বাদ চাইলে দেবাদিদেব শিব কৃত্তিকাসুরকে ‘অবধ্য’ বর প্রদান করেন । সেই থেকে শিবের আশীর্বাদ বর প্রাপ্ত কৃত্তিকাসুর তার জনজাতিকে নিয়ে দেবতাদের ত্রস্ত করে তোলে। দেবতাদের আর্জিতে যুদ্ধের দেবতা ইন্দ্র কৃত্তিকাসুরকে বধ করতে গেলেও ব্যর্থ হয় । এর পর দেবতাদের সঙ্কট কাটাতে ইন্দ্রদেব বিষ্ণুর কাছে গেলে জানা যায় কৃত্তিকাসুর শিবের কাছে অবধ্য বর প্রাপ্ত হয়েছে। তবে বধের একটা উপায় আছে সেটা হল কৃত্তিকাসুর যতই অবধ্য বর প্রাপ্ত হোক না কেন শিবের পুত্র তাকে বধ করতে পারবে । তখন শিবের কাছে দেবতাদের একটি প্রতিনিধি দল সন্তান উৎপাদনের কথা বললে দেবাদিদেব রাজি হয় নি । পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠলে কৌশলে বিষ্ণু কামদেবকে দিয়ে অসাধু উপায়ে শিবের মধ্যে কামোন্মদনা জাগিয়ে তোলে। পরে সেখান থেকে কার্তিকের জন্ম হয়। সেই শিব পুত্র কৃত্তিকাসুরকে বধ করে দেবতাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন।
🏵️ কৃত্তিকাসুর বধের গল্পের সঙ্গে তারকাসুর বধ ও বৃক্রাসুর বধের গল্পের অনেক মিল পাওয়া যায় । ‘কৃত্তিকা’ মূলত কোম জনজাতি গোষ্ঠীর নেতা। আর্যদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কাছে সে সময় অনেক জনগোষ্ঠী নিজেদের সংস্কৃতি ত্যাগ করে আর্যদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল ।
🌼কালিকা পুরাণ🌿
কার্তিকের জন্ম দেওয়ার জন্য বত্রিশ বছর ধরে রতিসংগম করেছিলেন শিব-দুর্গা। রামায়ণ আবার এককাঠি বাড়া। সেখানে লেখা আছে, একশো বছর। এদিকে তার ফলে দেবতাদের সংসার টলে উঠল। ইন্দ্র দেখলেন, তাঁর ইন্দ্রত্ব যায় যায়। অগত্যা ব্রহ্মাকে দিয়ে শিবকে অনুরোধ করালেন সেই মহাসুরত প্রত্যাহারের জন্য। শিব রাজি হলেন। তাঁর নির্দেশ মতো, অগ্নি সেই বীর্য নিয়ে ফেললেন গঙ্গায়। পার্বতীর বদলে গর্ভাধান হল গঙ্গার। অতৃপ্তা পার্বতী দেবতাদের অভিশাপ দিলেন, তোরা আঁটকুড়ে হয়ে থাকবি! এদিকে গঙ্গার গর্ভে জন্ম হল স্কন্দ ও বিশাখ নামে দুই ছেলের। পরে দুই শিশু এক হয়ে একটি শিশুতে পরিণত হল। কৃত্তিকা নামে এক নারীর হাতে লালিত পালিত হয়ে তার নাম হল কার্তিকেয়।
🏵️বামনপুরাণ🌿
একই গল্প বলা হয়েছে। তবে সেখানে গঙ্গা নদীর বদলে রয়েছে কুটিলা নামে এক নদীর নাম। আর এই গল্পটা আরও একটু বিস্তারিত। মোদ্দা কথাটা একই। শিবপুরাণে জ্ঞানসংহিতায় মোটামুটি একই গল্প। তবে সেখানে তিনি গঙ্গার তনয় নন। গঙ্গা শিব বীর্যের তেজ সহ্য করতে না পেরে তা ত্যাগ করেছিলেন শরবনে। সেখানেই জন্ম হয় কার্তিকের। জন্মের পর সেখানে ছয় রাজকন্যা এসে হাজির। তাঁরা শিশুটিকে দেখে ‘আমার পুত্র, আমার পুত্র’ বলে ঝগড়া করতে লাগলেন। কার্তিক তখন ছয় মুখ বের করে ছয় জনের স্তন্যপান করলেন। নাম হ'ল ষড়ানন।
আবার কোনো কোনো মতে, তিনি শিবেরও ছেলে নন। মৎস্য পুরাণে বলা হয়েছে, কার্তিক অগ্নির পুত্র। মহাভারতের বনপর্বে আছে, কয়েকজন ঋষিপত্নীকে দেখে অগ্নি মদনবাণে বিদ্ধ হন। সেই সুযোগে দক্ষকন্যা স্বাহা ঋষিপত্নীদের বেশ ধরে অগ্নির সঙ্গে একাধিকবার রতিসংগম করেন। কিন্তু প্রতিবারই অগ্নির বীর্য হাতে নিয়ে তিনি শ্বেতপর্বতে স্বর্ণকুণ্ডে নিক্ষেপ করেন। এরই ফলে জন্ম হয় কার্তিকের।
🌼পদ্মপুরাণ🌿
শিব-দুর্গার ছেলে কার্তিক চিরকুমার, ব্রহ্মপুরাণে আছে গল্পটা। তারকাসুর নিধনের পর দেবতারা কৃতজ্ঞ হয়ে কার্তিককে ইচ্ছামতো ভোগ করার আশীর্বাদ করেছিলেন। সে লম্পট দেবতাদের বউদের নিয়ে ভোগ করে বেড়াতে লাগল। তখন দেবতারা বাধ্য হয়ে পার্বতীর কাছে পুত
🍁 সংস্কৃত শব্দের জটিলতায় কার্তিক 🌿
🌼দেব সেনাপতি কার্তিক অর্থাৎ দেবতাদের সেনাপতি কার্তিক।
দেবসেনা পতি কার্তিক অর্থাৎ ইন্দ্রকন্যা দেবসেনার পতি কার্তিক।
সেনাদলের প্রতি ডেডিকেটেড কার্তিক। যুদ্ধ ছাড়া এবং দেবতাদের বিজয় ছাড়া কিছু ভাবেন না। দেবত্বের সংরক্ষক কার্তিক। পরম পাবন কার্তিক। নিত্যশুদ্ধ কার্তিক। তাই তিনি ব্রহ্মচারী। ভেবে দেখুন এই দর্শনটি ভুল না।
🌼আবার দেবসেনা র পতি কার্তিক। বল্লির পতি কার্তিক। পরম প্রেমিক। বল্লি এর সঙ্গে তার প্রেমকাহিনী দক্ষিণ ভারতে গেলেই শুনতে পাবেন। বল্লি যে বিয়ে করার জন্য তার বাবা ও ভাই এর সঙ্গে যুদ্ধ করলেন।
🍁 শংকরাচার্য পরম্পরা অনুসারে ভগবান কার্তিক 🌿
🏵️কুমার-কার্তিক দেব সেনাপতি, যুদ্ধের দেবতা বা হরগৌরীর পুত্ররূপে সকলের নিকট পরিচিত হলেও তিনি একই সাথে ব্রহ্মজ্ঞান, বেদ, যজ্ঞ ও সকলজীবের অধীশ্বর। কাঞ্চী পরমাচার্য শ্রীশ্রীচন্দ্রশেখরেন্দ্র সরস্বতী মহাস্বামীজি এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন,
"সুব্রহ্মণ্য কে? সত্য(ব্রহ্মজ্ঞান)কে যিনি জ্ঞাত তিনি ব্রাহ্মণ তথা ব্রহ্মজ্ঞানী। সাধারণত 'ব্রহ্ম' ভগবানের সেই নির্গুণ সর্বোচ্চ পরমাত্মা স্বরুপকে বোঝায়। এর আরেকটি অর্থ বেদ। উপনয়নের মধ্যে দিয়ে একটি শিশুকে বেদপাঠ আরম্ভ করে, একে ব্রহ্মোপদেশম্ বলে। বেদপাঠকে সে ব্রহ্মচারী হয়, ব্রহ্মযজ্ঞম পালন করে। সুব্রহ্মণ্য হল দিব্যসত্ত্বার প্রতীক, সেই অন্তিম সর্বোচ্চ প্রকাশের প্রতীক, তিনি বেদ ও ব্রাহ্মণদের ঈশ্বর।
🏵️বেদপাঠের মূল উদ্দেশ্য অগ্নি, অগ্নির পূজা (তথা যজ্ঞ)। এবং সুব্রহ্মণ্য হলেন সেই ঈশ্বর যিনি অগ্নি স্বরূপে বিরাজিত। তিনি শিবের তৃতীয়চক্ষু হতে নির্গত অগ্নির ছয়টি স্ফুলিঙ্গের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশিত করেছিলেন। তিনি বেদের দেবতা, ব্রহ্মজ্ঞানীদের ঈশ্বর, যিনি বেদের ব্রহ্মজ্ঞানে জগতকে আলোকিত করেন। জগতগুরু আদি শঙ্করাচার্য তার 'সুব্রহ্মণ্য ভুজঙ্গম'-এ বলেছেন,
ময়ূরাধিরূঢ়ং মহাবাক্যগূঢ়ং মহোহারিদেহং মহচ্চিত্তগেহম।
মহীদেবদেবং মহাবেদভাবং মহাদেববালং ভজে লোকপালম || ৩||
🏵️'মহিদেব' অর্থাত ব্রাহ্মণ; 'মহিদেব দেবম' ব্রাহ্মণদের তথা ব্রহ্মজ্ঞানীদের ঈশ্বর। প্রাচীনতম তামিল ধর্মগ্রন্থ থিরুমুরুগাত্রুপ্পাদাই-এ এই বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা যে ষন্মুখের ছয়টি আনন ভক্তদের ছয় ইচ্ছাকে ভিন্ন উপায়ে পূর্ণতা প্রদান করেন। বিদগ্ধ ও ধার্মিক ব্রাহ্মণগণ সেই সুব্রহ্মণ্যকে উদ্দেশ্য করেই যজ্ঞাদি কর্ম করেন। যজ্ঞ কর্মে অংশগ্রহণকারী ব্রাহ্মণদের 'ঋত্বিক' বলা হয়। ষোল প্রকার ঋত্বিকের মধ্যে একজন 'সুব্রহ্মণ্য'। এই সব থেকে এটা স্পষ্ট যে সুব্রহ্মণ্য বেদের ঈশ্বর।
🏵️সুব্রহ্মণ্য হলেন ব্রাহ্মণদের ঈশ্বর। কিন্তু তিনি কি শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের ঈশ্বর? তা নয়; তিনি সকল জীবের ঈশ্বর। তার দুই স্ত্রীর একজন দেবরাজ ইন্দ্রকন্যা এবং অন্যজন একজন উপজাতি কন্যা। কেউ কেউ বলতে পারে, তিনি একজন তামিল ঈশ্বর (দ্রাবিড়স্বামী), আবার কেউ কেউ বলতে পারেন যে তিনি শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের ঈশ্বর - তাঁর নাম নিজেই সাক্ষ্য। কিন্তু সত্য যে অন্যথা। তিনি যে সকল মানুষের, সকল জীবের ঈশ্বর তাতে কোন সন্দেহ নেই।"
🌼ওঁ কার্তিকেয় মহাভাগং ময়ুরোপরিসংস্থিতাম্
তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভ্যাং শক্তিহস্তং বরপ্রদম্।।
শত্রুহন্তারং নানালংকারভূষিতাম্।
প্রসন্নবদনম্ দেবং কুমারম্ পুত্রদায়কম্।।
🍁বাংলা এই প্রচলিত জোড়া কার্তিক (স্কন্দ ও বিশাখ )🦚
🏵️জোড়া কার্তিক হলে স্কন্দ ও বিশাখ।
দুই জোড়া কার্তিক হলে, স্কন্দ, শাখ, বিশাখ ও নৈগমেয়।
তারকাসুর বধের পর শিব, পার্বতী, অগ্নি ও স্বাহা, কার্তিকের এই চার পিতা মাতার চারজনেই কার্তিককে স্বতন্ত্র রূপে চাইলে কার্তিক নিজেকে চার ভাগ করে সেই চার পিতা মাতাকে প্রদান করেন।
স্কন্দ শিবের দ্বারী হন, বিশাখ দেবীর বলি ভোজী হন, শাখ অগ্নির দূত হন, আর নৈগমেয় স্বাহার সাথে শিশু রক্ষক দেবতা হন।
🌼গণেশের কাছে প্রতিযোগিতায় পরাজিত হলে কার্তিক মহাশূর মূর্তিতে গণেশের কিংকর হন।
ইন্দ্র তাঁকে পুত্র রূপে চাইলে, এই কার্তিক যুবরাজ জয়ন্ত হন। একই ভাবে অষ্ট দিকপালের প্রত্যেকের পুত্র রূপেই কার্তিক আবির্ভূত হয়ে লীলা করেন।
কিন্তু এই একই কার্তিক সুব্রহ্মণ্য রূপে এই সকল মূর্তির উর্দ্ধে নিজ লোকে অবস্থান করেন পরব্রহ্ম রূপে।
🍁 বাহন হিসেবে কেন ময়ূরের চয়ন🌿
🌼অষ্টম শতকের ভাস্কর্য কার্তিকের বাহন আলস্যবিহীন ময়ুর । ময়ূরের পায়ে একটি সাপ অর্থাৎ অহংবোধ ও কামনা বাসনা বলি দিয়ে তিনি যুদ্ধ করতে ব্যস্ত। ময়ূর অত্যন্ত সজাগ এবং কর্মচঞ্চল পাখী । সৈনিক কার্তিকের সবগুণগুলি সে বহন করে । তাই কার্তিকের বাহন ময়ূর।
🍁 বাংলায় কার্তিক পূজা 🌿
🌼কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে হয় কার্তিকের পুজো। কোন কোন প্রাচীন পরিবারে ধারাবাহিকভাবে, এবং এক-দুটি বিশেষ অঞ্চলে খুব হইচই করে এই পুজো হয় ৷ কিন্তু সর্বজনীন পুজো হিসাবে কার্তিকপুজো বাঙালি সমাজে এখন আর সেরকম জনপ্রিয় নয়। বাংলায় কার্তিক সংক্রান্তির দিন সাংবাৎসরিক কার্তিক পুজোর আয়োজন করা হয় ৷ পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুঁড়া-বাঁশবেড়িয়া,সোনামুখী অন্চলে , মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা,গণকর,বহরমপুরের খাগড়া অন্চলে,বর্ধমান জেলার কাটোয়া অঞ্চলের কার্তিক পুজো বিশেষ জনপ্রিয়। মানুষের আবেগ, আশা,আনন্দ এই কার্তিক পূজাকে ঘিরে।
🏵️কাটোয়ার বিখ্যাত কার্তিক পূজা 🌿
🌼চৈতন্যের দীক্ষাভূমিতে কার্তিক পুজো শুরু নিয়ে অনেক মত আছে। তবে প্রামাণিক মত হল কার্তিক মূলত বারবণিতাদের হাত ধরে কাটোয়ায় পুজো পেতে শুরু করেছিল । ইতিহাস গবেষকদের একাংশের মতে কাটোয়ায় প্রথম কার্তিকের পুজো শুরু হয়েছিল আলীবর্দীর শাসন কালের শেষ সময়ের পর ১৭৫০ সালের কাছাকাছি।সেটা নেহাতই ঘরোয়া কার্তিক আরাধনা। বর্গী দস্যু ভাস্কর রাম পন্ডিত যখন কাটোয়ার কাছে দাঁইহাটের ভাউসিং এলাকাকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করে রাজ্যের সীমানা নির্ধারণ করতে শুরু করেছিল তখন বর্গী সৈন্যদলের মনোরঞ্জনের জন্য গ্রাম থেকে অন্ত্যজ শ্রেনীর যুবতীদের জোর করে ধরে এনে কাটোয়ার উপকন্ঠে নবনগর বা কখনও কাটোয়ার গঙ্গা তীরবর্তী স্থানে রাখা হত। আলীবর্দীর তাড়া খেয়ে বর্গী দস্যুরা কাটোয়া ছাড়লেও সেই অসহায় শিকড়চ্যুত মহিলারা গঙ্গা তীরবর্তী স্থানেই পাকাপাকিভাবেই বসবাস করতে থাকল এবং বানিজ্য নগরী কাটোয়া আসা বণিকদের মনোরঞ্জনের কাজকে নিজেদের পেশা হিসাবে বেছে নিল। ভবিষ্যতে সন্তান কামনায় এই মহিলারাই কার্তিক আরাধনা শুরু করেছিল বলে গবেষেকদের দাবি।
🏵️যদিও ভিন্নমত আছে , ভাগীরথীর নিম্ন অববাহিকাকে গঙ্গা বলা হয় । ৮৩২ খ্রিস্টাব্দে যখন রাজা আদিত্য সুর অনাদিবর সিংহ নামে এক কায়স্থকে "কন্টক নগর ডিহির" রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দান করেছিলেন তার অনেক পর এই নদীতীরবর্তী এলাকায় গঙ্গারিডি সভ্যতার সন্ধানের কথা জানা যায় । এরা অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষ , এদের জীবিকা ছিল মাছ ধরা এবং ভূস্বামীদের হয়ে লেঠেলগিরি করা। গবেষকদের অনেকেই মনে করেন যুদ্ধের দেবতা কার্তিক এই গঙ্গারিডিদের দেবতা হয়ে পূজিত হত,কার্তিক গঙ্গারিডিদের হাত ধরে কাটোয়ায় এসেছিল কালক্রমে পথবদলে যৌনকর্মীদের কাছে চলে যায়।ঊনবিংশ শতকের শেষ দশকে কাটোয়ার স্টিমার ঘাট লাগোয়া জমিতে শিশু কার্তিকের পুজো শুরুর প্রমাণ পাওয়া যায়। 'হোর মিলার অ্যান্ড কোম্পানির' নাবিকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চুনারিপটির মহিলারা কার্তিক পুজো শুরু করেছিল। একই সময় তাঁতিপাড়ার বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী তারাপদ খাঁয়ের উদ্যোগে কার্তিক আরাধনা শুরু হয়েছিল।বিংশ শতাব্দীর তৃতীয়-চতুর্থ দশকে কার্তিক পুজোর জন্য কাটোয়ার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে 'ঈশ্বরবৃত্তি' আদায়ের প্রথা শুরু হয়েছিল।
🌼 বর্তমানে বাঙালির অন্যতম উৎসব কার্তিক পুজো কাটোয়ার মানুষের নিজের উৎসব।একদা যৌনকর্মীদের হাত ধরে এসে এখন সর্বজনীন রূপ পেয়েছে কাটোয়ার কার্তিক। শাস্ত্রমতে কার্তিকের দুই স্ত্রী ছিল দেবসেনা ও ভল্লা। কার্তিকের সন্তানের কথা সেভাবে কোথাও পাওয়া যায় না।কার্তিককে কেন্দ্র করে পুরাণ কথা দিয়ে নানান পুতুলের সাহায্যে ‘থাকা’ (থরে থরে সাজানো)করে কাহিনিকে ফুটিয়ে তোলা হত। বর্তমানে আধুনিকতার মোড়কে সেই সব প্রাচীন ধারা কালের স্রোতে হারাতে বসেছে। তবে শোভাযাত্রা কে ‘লড়াই’ নামে ডাকা শুরু হয়েছিল বহুকাল থেকে, আদি কাটোয়ার যখন কার্তিকের ‘থাকা’ বাঁশের সাঙ বেঁধে বাবুদের ভাড়া করা বেহারার দল' বহন করত তখন নগরের স্বল্প পরিসর রাস্তায় কোন বাবুর ‘থাকা’ আগে যাবে তার একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা হত সেটা উপভোগ করার মতই ছিল, "বাবু সংস্কৃতির" চাপে সেটাই ক্রমে 'লড়াই' নামে খ্যাতি লাভ করে।দেব দেবীর শোভা যাত্রাকে লড়াই নামে ডাকার কোন রীতি সচরাচর কোথাও পাওয়া যায় না ।
🏵️কার্তিক ঠাকুর শুধুমাত্র সেনাপতিই নন।কৃষির ও দেবতা।তাইতো রাঢে নব্বান কার্তিক নামে বহুল প্রচলিত।উর্বরতার জন্যেও তাকে প্রার্থনা করে মানুষ। এত পরাক্রমশালী হযেও বাঙালি কেনো শুধুমাত্র সন্তান উৎপাদনের দেবতা বলে পুজো করে?কেনো নবদম্পতীদের ঘরেই ঘটা করে পুজো হয?কেনো বাড়িতে ফেলে প্রায়ই জোর করে পূজো আদায় করা হয়?কবে থেকে বাঙালি মহাবল শালী কার্তিক কে এক হাসির খোরাক করলো?তাই রস করে বাঙালি ডাকে হ্যাংলা কার্তিক।
🏵️হয়ত এইসবের জন্য বাঙালির অধঃপতন শুরু।
দক্ষিণ ভারতের কথা বাদ দিলাম ।আমরা যারা রসগোল্লা দাবি নিয়ে চুলোচুলি করি ওড়িশার সঙ্গে।সেই ওড়িশার মানুষ আজও ভগবান কার্তিককে শক্তি,পরাক্রমী ,যোদ্ধা রুপেই পূজো করে।তাইতো তারা ভয়ঙ্কর কালাপাহারের আক্রমণ,মুঘল,নবাব দের অধীনে থাকার পরেও নিজেদের কৃষ্টি কালচার ভুলে যায়নি।
সংগৃহীত।
শুভমস্তু ,
Achariya Shankhaa।
আমাদের পেজ
https://www.facebook.com/share/19MdMprPri/ ফলো করুন আরও এমন তথ্যবহুল পোস্টের জন্য।
____________________________________
🍁 In Search of the Divine General Kartikeya 🌿
🦚Although Kartikeya is an A***n deity, his worship in Bengal follows the solar month.
From the 4th–5th century CE, images of Kartikeya riding on a peacock are found in North India. Evidence of Kartikeya worship exists in the Gupta era and Pala period as well.
Researchers believe that long before the Skanda Purana was composed, Kartikeya was already worshipped as a deity through folk legends and early mythic traditions.
🌼 Ṣaḍānanaṁ candanalepitāṅgaṁ
Mahāmatiṁ divyamayūravāhanam |
Rudrasya sūnuṁ suralokanāthaṁ
Brahmaṇyadevaṁ śaraṇaṁ prapadye || 🌿
🌼Some call Him Skanda, some Murugan, and some Subrahmanya.
He is the Commander of the Divine Army — the God of War.
To us, He is popularly known as Kartikeya or Kartik, the son of Shiva and Parvati.
Whenever a war breaks out in the heavens, Kartikeya is summoned.
Just as ancient Europe revered Ares among the Greeks and Mars among the Romans, the Indian subcontinent worships Kartikeya, the God of War.
---
🍁 Kartik in the Puranas 🌿
🏵️According to the Puranas, Kartikeya is golden-hued and has six heads; hence His name Ṣaḍānana.
As a War God, His six heads symbolize absolute awareness—
the five senses (eyes, ears, nose, tongue, skin)
plus the focused mind.
He carries the spear, bow, and arrows.
He is eternally youthful, tender in form yet immensely powerful, always leading the divine armies.
His mount is the peacock.
He was born under the Krittika constellation, nurtured by six Krittikas, hence His name Kartikeya.
He holds many other names:
Guha, Pavaki, Mahasena, Shanmukha, Kumara, Kumaresa, Gangeya, Vishakha, Kukkutadbhvaja, Naigameya, etc.
Once, Kartikeya was revered throughout the Indian subcontinent.
The Skanda Purana describes Him extensively, as do the Mahabharata and ancient Sangam Tamil literature.
---
🌼 In the Skanda Purana 🌿
There are many stories of Kartikeya, but Shiva Purana refers to Him as “Kumara Kartik.”
There is a beautiful story of how the Commander of the Gods became a full-fledged deity:
Krittikasura, an ardent devotee of Shiva, pleased the Lord with his penance. When asked for a boon, Shiva granted him virtual invincibility.
Empowered, the asura began tormenting the gods. Even Indra failed to defeat him.
Vishnu revealed that only a son of Shiva could kill the asura.
But Shiva was unwilling to father a child.
Then, through a clever plan, Vishnu enlisted Kamadeva to awaken Shiva’s desire.
From that divine spark, Kartikeya was born — the one destined to slay Krittikasura.
Thus Kartikeya became beloved of the gods.
This tale closely resembles the legends of Tarakasura and Bheemasura.
The Krittikas represent an indigenous tribe (Koi/Kui).
Many such communities gradually merged with the A***n culture.
---
🌼 In the Kalika Purana 🌿
Shiva and Durga engaged in union for 32 years to give birth to Kartikeya.
In the Ramayana, this extends to 100 years.
This prolonged union threatened the order of heaven.
Indra, fearing for the cosmos, requested Brahma to intervene.
At Brahma’s plea, Shiva ended the union.
The divine seed was carried by Agni, then released into the Ganga, who became the surrogate mother.
Parvati, angered by being replaced, cursed the gods to remain “childless”!
From Ganga were born Skanda and Vishakha, who later merged into one child.
Raised by the Krittikas, he became Kartikeya.
---
🌼 In the Vamana Purana 🌿
The story is similar, except the river is Kutila instead of Ganga.
In the Jñāna-saṁhitā of the Shiva Purana, Ganga cannot bear the fiery seed and drops it in a forest, where Kartikeya is born.
Six princesses arrive, each claiming Him as her son; Kartikeya grows six faces to nurse from all of them — hence Ṣaḍānana.
In the Matsya Purana, Kartikeya is not Shiva’s son at all but the son of Agni and Svaha, though ultimately the child was placed in a golden womb atop Mount Shveta.
---
🌼 In the Padma Purana 🌿
The celibate and handsome Kartikeya was blessed with unconstrained enjoyment after slaying Tarakasura. Misusing this, He cavorted with the wives of the gods.
The gods then sought Parvati’s intervention.
---
🍁 The Linguistic Duality of “Kartikeya” 🌿
🌼 Deva Senapati Kartik — The General of the Gods.
🌼 Devasenā-pati Kartik — The Husband of Devasena.
As Commander of the divine armies, He thinks only of war and victory — the protector of cosmic order, eternally pure, eternally chaste.
Yet in the South He is also the loving husband of Devasena and Valli — the romantic warrior who fought Valli’s family for her hand.
---
🍁 Kartikeya According to the Shankaracharya Tradition 🌿
Though known as the God of War and Son of Shiva, He is also the Lord of Brahmajnana, the Vedas, the Sacrifice, and all beings.
Kanchi Paramacharya Chandrasekharendra Saraswati said:
> “Who is Subrahmanya?
He is the knower of Truth (Brahmajnana).
He is the God of the Vedas,
the God of those who seek the Ultimate.”
He is considered the embodiment of Agni, born from the six sparks of Shiva’s third eye.
Adi Shankaracharya praises Him in the Subrahmanya Bhujangam:
Mayūrādhirūḍhaṁ mahāvākyagūḍhaṁ
Mahohāridēhaṁ mahaccittagēham |
Mahīdēvadēvaṁ mahāvēdabhāvaṁ
Mahādēvabālaṁ bhajē lōkapālam ||
He is the God of Brahmins (Mahidevas), yet also the God of all beings, for His two consorts represent both the A***n and the tribal lineages.
---
🍁 The Traditional Bengali Pair — “Jora Kartik” 🦚
Traditionally, “Jora Kartik” refers to Skanda and Vishakha.
When considered as a foursome, they are:
Skanda, Shakha, Vishakha, and Naigameya.
After slaying Tarakasura, Kartikeya divided Himself into four forms so each divine parent (Shiva, Parvati, Agni, Svaha) could have a child.
Skanda becomes Shiva’s guardian,
Vishakha becomes the consumer of Devi’s offerings,
Shakha serves as Agni’s messenger,
and Naigameya becomes the protector of children with Svaha.
---
🍁 Why the Peacock as His Mount? 🌿
An 8th-century sculpture shows Kartikeya’s mount — the alert, tireless peacock — trampling a serpent, symbolizing destruction of ego and desire.
The peacock represents vigilance, courage, and energetic action — perfect traits for the divine warrior.
---
🍁 Kartik Puja in Bengal 🌿
Kartik Puja is held during Kartik Sankranti.
In some families and regions, it is celebrated with great enthusiasm.
In Bengal it is especially famous in:
Chinsurah–Bansberia
Sonamukhi
Berhampore (Khagra), Murshidabad
Katwa (Bardhaman)
The festival carries deep emotional and cultural significance.
---
🏵️ The Famous Kartik Puja of Katwa 🌿
Many theories describe its origin, but the most accepted one says that the worship began with the courtesans of old Katwa around the 1750s during the decline of Alivardi Khan’s rule.
Bargi raiders abducted young lower-caste women into the outskirts of Katwa to serve the soldiers.
After the raiders fled, the abandoned women settled permanently and took up the profession of entertaining traders.
Desiring children, they began worshipping Kartikeya.
Some scholars, however, argue that Kartikeya was originally the deity of the ancient Gangaridai people and entered Katwa through their traditions.
In the late 19th century, courtesans with help from sailors (from H***e Miller & Co.) revived Kartik Puja.
By the early 20th century, merchants also took part, and the grand “processions,” known as Laṛāi (the fight), became cultural events.
---
🍁 Why Did Bengal Reduce the Mighty Kartikeya to a Comic Figure? 🌿
Though Kartikeya is a mighty God of War — protector of fertility and agriculture — Bengal gradually transformed Him into a symbol of bachelorhood and mockery, the “hangla Kartik” (hungry Kartik).
Perhaps this cultural decline reflects a deeper societal fall.
While Bengal debated over sweets with Odisha, the Odias preserved Kartikeya as a powerful warrior deity, surviving invasions and political upheavals.
---
Collected by:
Shubhamastu.
Achariya Shankhaa
Please follow our page https://www.facebook.postscom/share/19MdMprPri/ for such informative posts