01/12/2025
কিডনি ও ইউরিটেরিক স্টোন: সহজ গল্পে গুরুতর রোগের কথা
সকালে ঘুম ভাঙতেই রামুর কোমরের ডান পাশে তীব্র ব্যথা। প্রথমে সে ভাবল—“হয়তো মাংসপেশিতে টান লেগেছে।”
কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই ব্যথাটা নেমে এল পেটের নিচের দিকে। ঘাম, বমি বমি ভাব—সব মিলিয়ে হাঁটাও প্রায় ভুলে গেল।
পাড়ার ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকতেই তিনি বললেন
“লক্ষণ শুনে মনে হচ্ছে স্টোনের ব্যথা।”
স্টোন আবার কী? সহজ ব্যাখ্যা -
আমাদের কিডনি প্রতিদিন শরীরের বর্জ্য ছেঁকে ফেলে।
কিন্তু—
•কম জল খাওয়া
•খুববেশি লবণ বা প্রোটিন
•ফাস্টফুড বেশি খাওয়া
•কিছু হরমোনাল/বংশগত কারণ
এই সব মিলেই প্রস্রাবের ভেতর ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিডের মতো খনিজ জমে ছোট ছোট “পাথর”—বা স্টোন—তৈরি হয়।
স্টোন যখন কিডনি থেকে ইউরেটারে নামার চেষ্টা করে, তখনই তীব্র ব্যথা শুরু হয়।
কোন লক্ষণে বুঝবেন?
অনেকেই রামুর মতো ব্যথা শুরু না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারেন না।
সাধারণ লক্ষণগুলো হলো—
হঠাৎ শুরু হওয়া তীব্র কোমর বা পেটের ব্যথা
প্রস্রাবে জ্বালা বা লালচে রং
বমি বা বমি বমি ভাব
পেট ফুলে ওঠা
কখনো জ্বর
প্রস্রাব কমে যাওয়া বা আটকে যাওয়া
চিকিৎসা কীভাবে হয়?
ডাক্তার সাধারণত আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান করেন স্টোনের সাইজ ও অবস্থান জানতে।
ছোট স্টোন হলে--
পর্যাপ্ত জল পান ও সহায়ক কিছু ওষুধপত্র
বড় স্টোন হলে
অপারেশন
সঠিক পদ্ধতি নির্ভর করে স্টোনের আকার, অবস্থান, সংক্রমণ ও রোগীর অবস্থার উপর।
কীভাবে স্টোন থেকে নিজেকে বাঁচাবেন?
জীবনযাপনে কয়েকটি সহজ পরিবর্তন—
প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান
লবণ কমিয়ে দেওয়া
ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত প্রোটিন কমানো
ফল–সবজি বেশি
বছরে একবার চেকআপ
প্রস্রাব আটকে না রাখা
স্টোন একবার হলে আবার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই প্রতিরোধই সেরা উপায়।
শেষ কথা-
কিডনি বা ureteric স্টোন খুব সাধারণ একটি সমস্যা—কিন্তু ব্যথা অত্যন্ত তীব্র।
সময়মতো পরীক্ষা, সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাপনের ছোট পরিবর্তনে এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।