22/09/2021
আজ কিছু কথা বলবো হোমিওপ্যাথি নিয়ে।।
হোমিওপ্যাথি এমন একটি বিষয় যাকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রকমের ধারণা প্রচলিত আছে।।
কেউ বলে তুকতাক কেউবা বলেন প্লাসিবো ইফেক্ট, অনেকে বলেন যে সকল রোগ নিজের থেকে সেরে যেত সেগুলোই হোমিওপ্যাথিতে সাড়ে, আবার কেউ কেউ একে অন্ধের মত বিশ্বাস করে।।
আমি তাদের কারোর বিশ্বাসে আঘাত করতে চাই না, সকলের নিজস্ব মতামত দেওয়ার স্বাধীন অধিকার আছে।। এবং তিনি কি পদ্ধতিতে চিক্তিসা করাবেন সে সিদ্ধান্তও তার একান্ত ব্যাক্তিগত।।
বিগত 2001 সাল থেকে হোমিওপ্যাথির সঙ্গে একজন ছাত্র এবং পরবর্তীকালে একজন চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত থেকে যেটুকু শিখেছি সেটা একটু সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করব।।
হোমিওপ্যাথি একটি নির্দিষ্ট ফিলোসফির উপর ভিত্তি করে চলে।।
"Similia Similibus Curentur" বা a disease may be cured by something that can cause similar symptoms।
এই একটি সূত্রের উপরে দাড়িয়ে সম্পূর্ণ ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি দাড়িয়ে আছে।।
সহজ ভাবে বললে কোন সুস্থ মানুষের উপর যখন কোন হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, ঔষধের ফলে স্বাস্থ্যের যে পরিবর্তন বা সিম্পটম দেখা যায়সেইগুলোকে নথিভুক্ত করা হয় ।।
এবং সেই প্রকার কোন সিম্পটম কোন রোগীর মধ্যে পাওয়া গেলে তাকে সেই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।।
এটি কে হোমিওপ্যাথির ক্ষেত্রে প্রুভিং সিম্পটম বলা হয়।।
এছাড়াও ক্লিনিক্যালি কোন রোগীকে ওষুধ দিয়ে দেখা যায় যে তাদের ক্ষেত্রে কিছু রোগের উপশম হয়েছে বা কারো শরীরে বিষক্রিয়াজনিত কোন ঘটনা ঘটলে তার থেকে যে লক্ষণ পাওয়া যায় সেগুলো কেউ নথিভূক্ত করা হয়।।
হোমিওপ্যাথির ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি ওষুধ কে এইভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে এই নথিভুক্ত লক্ষণ গুলি সঙ্গে রোগীর লক্ষণ কে মিলিয়ে চিকিৎসা করা হয়।।
সঠিক ভাবে প্রয়োগ করা হলে রোগী এসে বলেন তারা ভালো আছেন, রোগ সেরেছে কি না তার বিচার করার জন্য অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি আছেন, তার মধ্যে আমি যাচ্ছি না।।
এইভাবে চিকিৎসা করার মধ্যে যে মূল সমস্যা গুলি এসে দাঁড়ায় তার মধ্যে অন্যতম হলো রোগীর কাছ থেকেই লক্ষণ গুলি বের করা।। হোমিওপ্যাথিতে এমন অনেক লক্ষণ নথিভুক্ত আছে ওষুধ গুলির মধ্যে যেগুলি সাধারণ মানুষের কাছে বা রোগীর কাছে অবান্তর বলেই মনে হয়, যে কারণে হোমিওপ্যাথি ডাক্তার বাবু সেই প্রশ্ন গুলো করলে তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না।।
যেমন আপনি কি খেতে পছন্দ করেন বা আপনার শীত বেশি লাগে না গরম বেশি লাগে? , আপনি কোনো স্বপ্ন বারবার দেখেন কিনা? এই সকল কিছু নিয়ে একটি মানুষের রোগের চিত্র তৈরি করা হয়।। এবং তার উপর ভিত্তি করে ঔষধ দেওয়া হয়।।
তাই আপনার যে ওষুধে জ্বর সেরেছে অন্য জনের ও যে সেই ঔষধ এ জ্বর ভালো হবে তার কোনো কথা নেই।।
সকল সিস্টেমের মত এর ও কিছু লিমিটেশন আছে।। সব কিছু সারিয়ে দেবো এ দাবি কেউ করতে পারবেন না ।।
অনেকে বলে হোমিওপ্যাথির কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।। ভুল ওষুধ খেলে বা অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ খেলে হোমিওপ্যাথির ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং অনেকের ক্ষেত্রে সেটি বেশ মারাত্মক হয়।।
অনেকে বলেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্লেসিবো ইফেক্ট, সেটা নিয়ে আমি কোনো তর্কে যাচ্ছি না, শুধু একটি প্রশ্ন.... অধিকাংশ রোগী আমাদের কাছে আসেন আগে অনেক বড় বড় চিকিৎসক কে দেখিয়ে তাদের ঔষধ খেয়ে।।
তাহলে যদি প্লেসিব ইফেক্ট এর ফলেই রোগ সেরে যাবে তাহলে সেখানে ভালো হলো না কেনো?
সেখানকার গেটাপ বলুন ডাক্তার বাবুর সুনাম বলুন সেগুলো তো যে কোন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের থেকে অনেক বেশি।।
তাহলে মেন্টাল সেটিসফেকশন তো সেখানে অনেক বেশি হওয়ার কথা।। তাহলে ওষুধে কাজ না হলেও প্লাসিব ইফেক্ট অন্তত কাজ করার কথা।
কিন্তু সেটা এসে ঘটে যায় নাম হিন গেটআপ হীন কোনো 50-100 টাকার ডাক্তারের 50-60 টাকার ওষুধ খেয়ে।।
কিছু ভুল বললে জানাবেন।। ভালো লাগলেও জানাবেন।।
Dr D..K Biswas
B.H.M.S (Cal)